ঢাকা শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

ওসি প্রত্যাহারের খবরে থানায় পাওনাদারদের ভিড়

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৫, ০৯:০৩ পিএম
ওসি ফরিদ আহম্মেদ- ছবি: সংগৃহীত

ওসিকে করা হয়েছে প্রত্যাহার। এতে থানা ত্যাগ করে চলেও যান তিনি। কিন্তু এরপরই ঘটে বিপত্তি। ওসি চলে যাওয়ার খবরে থানায় আসতে থেকে একে একে পাওনাদার। এক পর্যায়ে জমে যায় ভিড়। এমনই ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইলে।

জানা যায়, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হওয়াসহ নানা অভিযোগ উঠে নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহম্মেদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বেশকিছু দিন ধরেই তাকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। যারপ্রেক্ষিতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহারের আদেশে শুক্রবার (১৪ মার্চ) ভোরে থানা ত্যাগ করেন তিনি।

ওই খবর পেয়ে কমপক্ষে ৩০ জন পাওনাদার থানায় এসে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অধিকাংশই এলাকার বিভিন্ন স্থানের দোকানদার ও ব্যবসায়ী।

যাদের কারও অভিযোগ দোকান থেকে বাকীতে পোশাক নিয়েছেন। আবার কারও অভিযোগ ফ্যানসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়েছেন। কিন্তু কোন টাকাই ওসি পরিশোধ করে যাননি।

এরমধ্যেই আবার ওই ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তুচ্ছ ঘটনায় এক রাতেই পাঁচটি অভিযোগ দায়েরে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার।

 

থানা আসা পাওনাদারদের মধ্যে রয়েছেন কাপড়ের ব্যবসায়ী মো. মোফাজ্জল হোসেন খান রেনু। নান্দাইল পৌর বাজারের ইসহাক মার্কেটের প্রাইম কালেকশনের কর্ণধার তিনি।

জানালেন, ওসির কাছে সব মিলিয়ে ‘১ লাখ ৪ হাজার ২৫০ টাকা’ পাবেন তিনি।

‘দোকান থেকে বিভিন্ন সময় পরিবারের জন্য পোশাক নিয়েছেন ওসি ফরিদ। এরমধ্যে গত শীতের শুরুতে নিয়েছেন তিনটি কাশ্মেরী শাল।’

পাওনার টাকার জন্য থানা আসেন নান্দাইল সদরের সুবর্ন ইলেক্ট্রনিক্সের মালিক ফরহাদ।

তিনি বলেন, ‘দোকান থেকে ফ্যানসহ বেশ কিছু মালামাল নিয়েছিলেন ওসি। গত এক বছর ধরে তার কাছে ১১ হাজার টাকা পাই।’

 

এদিকে নামপ্রকাশ না করার শর্তে অন্তত ৫ জন পাওনাদার জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন কারণে ওসিকে লাখের ওপরে টাকা দিয়েছেন।

তাদের একজন বলেন, ‘এখন উনাকে না পেয়ে হতাশ। আমার মতো আরো অনেকেই টাকা পাবেন বলে এসে ফেরত গেছেন।’

এদিকে ৫টি মামলার বাদী উত্তরবানাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন, চরভেলামারী গ্রামের রফিক সিকদার, জামাল উদ্দিন ও জয়নাল মিয়া এবং দত্তগ্রাম গ্রামের সাইফুল ইসলাম ওই ওসির বিরুদ্ধে গুরুত্বর অভিযোগ করেন।

তাদের দাবি, প্রত্যাহারের খবর পেয়ে এক রাতেই উপজেলার চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরকোমড়ভাঙ্গা চরওভেলামারী গ্রামের ৩টি, মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের দত্তগ্রাম এলাকার ১টি, গাঙাইল ইউনিয়নের উত্তর বানাইল গ্রামের ১টি সহ মোট ৫টি মামলা রেকর্ডভুক্ত করেন। এসব মামলা থেকে ৭৮ হাজার টাকা নেন ওই ওসি।

তাদের মধ্যে সবাই ১০ হাজার করে টাকা ওসিকে দিয়েছেন বলে তাদের দাবি। তবে চরভেলামারী গ্রামের জয়নাল মিয়ার দাবি, তিনি দুই বারে মোট ৩৮ হাজার টাকা দিয়েছেন।

 

তবে এ বিষয়ে জানতে ওসি ফরিদ আহম্মেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সম্ভব হয়নি।

ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার বলেন, ‘ওসির কাছে সাধারণ লোকজন টাকা পায়, এটি খুবই দুঃখজনক।’

এ বিষয়ে ওই ওসির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।