মির্জাপুরের আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া এলাকায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক ফিরুজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । ধর্ষণের ঘটনার ২৭ দিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ওই আসামি ধর্ষণ মামলার মূল আসামি বলে জানা যায়।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া এলাকার মো. নওশের আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শিশুটির বাবা প্রবাসী। সম্প্রতি ওই শিশু তার নানির বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঘটনার দিন শিশুটি গাছ থেকে বরই পাড়তে যায়। এ সময় অভিযুক্ত ফিরোজ শিশুটিকে ফুসলিয়ে শৌচাগারে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের কথা কাউকে বললে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন ফিরোজ।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার পর শিশুটি চুপচাপ হয়ে যায়। তাকে পরিবারের সদস্যরা নীরব থাকার কারণ নানাভাবে জানতে চান, কিন্তু সে কিছু না বলায় তাদের সন্দেহ হয়। অনেক চেষ্টার পর শিশুটি তার মাকে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। পরে ঘটনাটি প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হয়।
এদিকে, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ঘটনার এক সপ্তাহ পর কয়েকজন গ্রাম্য মাতবর সালিশের আয়োজন করেন। সালিশে ফিরোজকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিশকারীদের চাপের কারণে শিশুটির মা ‘বিচার’ মানতে বাধ্য হন। জরিমানার টাকার মধ্যে ৯২ হাজার টাকা তাকে দেওয়া হয়েছে বলে শিশুটির মা জানিয়েছেন।
পরবর্তীতে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গত শনিবার দুপুরে থানা-পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়। মামলায় ফিরোজ মিয়াকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত দুইজনকে আসামি করা হয়।
মির্জাপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন জানান, মির্জাপুরে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযান চালিয়ে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে মামলার প্রধান আসামি ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফিরোজ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে প্রেরণের মাধ্যমে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :