বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ঊষা প্লাজার মার্কেটের সামনে ও যাত্রী ছাউনি পাশে প্রতিদিন ৩০-৪০ হাজার লিটার দুধ কেনাবেচা হয়। এই দুধের বাজার প্রতিদিন ২ ঘণ্টার জন্য বসে ।
সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত শতাধিক সাইকেল ও ভ্যানে করে নিয়ে আসে লিটারে লিটারে দুধ। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে বেচাকেনা হয় কয়েকশ লিটার দুধ। এসব দুধ কিনে নিয়ে যায় স্বনামধন্য ঘোষ ও মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিকেরা।
এরপর বিকেলে দুধের বাজার বসে বাসস্ট্যান্ড যাত্রী ছাউনির সংলগ্ন এলাকায় ও দুপচাঁচিয়া পুরাতন বাজারে। বিশেষ করে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা যেমন- উপজেলা সদর, চৌমুহনী, তালোড়ার, খুনিহারার সুনামধন্য দই ও মিষ্টির কারখানার ব্যবসায়ী সহ দুপচাঁচিয়া বাজারের ৪-৫টি ঘোষেরা এসব দূধ কিনেন।
এক একটি ভ্যানে চার থেকে পাঁচটি করে ২০-৩০ লিটারের কন্টেইনার ভরে দুধ কিনে নিয়ে যায়। প্রতিদিন দুধ কেনার জন্য খুব সকালে দূরদূরান্ত থেকে শতাধিক কারখানার মালিকেরা আসেন।
সরজমিনে দুধ বাজারে ঘুরে পলাশ ঘোষের সঙ্গে কথা হলে বলেন, প্রতিদিন ২২০-২৫০ কেজি দুধ কিনে দই ও মিষ্টি তৈরি করি।
আরেকজন দুধ কিনতে আসা জয়দেব ঘোষ বলেন, প্রতিদিন ১৬০ কেজি -১৮০ কেজি দুধ কিনে দই ও মিষ্টি তৈরি করেন তিনি।
দুধের বাজার মনিটরিং ব্যাপারে খাদ্য পরিদর্শক মমতা রানী সাহা জানান, খাঁটি দুধের মান পরীক্ষা করার জন্য এখানে ভ্রাম্যমাণ ল্যাব টেস্টিং এর প্রয়োজন। যেহেতু ভ্রাম্যমাণ ল্যাব টেস্টিং করতে হলে রাজশাহীতে অবহিত করতে হয়, দুপচাঁচিয়াতে ভোর থেকে সকাল ৮টা মধ্যে দুধের বাজার কেনাবেচা হয়। তাই ভ্রাম্যমাণ ল্যাব টেস্টিং দিয়ে দুধের পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না, দুধে পানি মিশানোর ব্যারোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। বাজারে ভেজাল দুধ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে এসব ভেজাল দুধ ফেলে দিয়ে তাদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। তাই ঘোষরা ও মিষ্টির কারিগররা খাঁটি গরুর দুধ কিনতে স্বাচ্ছন্দ বোধ মনে করে।
দুপচাঁচিয়া এই দুধের বাজার শুধু একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র নয় বরং এটি স্থানীয় কৃষক,খামারি ও ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রতীক। দুপচাঁচিয়ায় মিষ্টি ও দই শিল্পের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি এই অঞ্চলের আশপাশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ভবিষ্যতে আরও উন্নত ব্যবস্থাপনায় ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হলে এটি জেলার অন্যতম রোল মডেল হয়ে উঠতে পারে।