এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে মোবাইল ফোনে কুপ্রস্তাব দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে রবিউল আলম নামের এক কলেজ অধ্যক্ষ। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই পরীক্ষার্থীর বাবা।
অভিযুক্ত রবিউল আলম লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ভুক্তভোগী ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী এবং ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
রোববার (১৬ই মার্চ) সকালে অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার।
অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্রী নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ও বাবা দিনমজুর হওয়ায় তার ফরম পূরণের টাকা কিছু কমানোর জন্য অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. রবিউল আলম বরাবর আবেদন করেন। তখন ওই শিক্ষার্থীকে অধ্যক্ষ রবিউল তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন।
এর আগে গত (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ইফতারের পরে মা ও বড় বোনের সামনে মোবাইলের লাউড স্পীকার চালু করে অধ্যক্ষ রবিউল আলমকে ফোন করে ফরম পুরনের বিষয়ে জানতে চায় ওই শিক্ষার্থী। পরে অধ্যক্ষ মেয়েটির পরিচয় পাওয়ার পর তাকে রাতে দেখা করতে বলেন। মেয়েটি প্রতিত্তোরে বলে, ‘আমি মেয়ে মানুষ রাতে কিভাবে দেখা করি।’ তখন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘এখনিতো তোমার দেখা করা উচিত, কারণ আমি এখন রোজা নাই।’ মেয়েটি এ কথা শোনার পর লজ্জিত হয়ে মোবাইল ফোন কেটে দেয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে এসে অশ্রুসিক্ত নয়নে দিনমজুর বাবা বলেন, ‘আমি তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার খেটে খাওয়া একজন দিনমজুর মানুষ। তাই পরীক্ষার ফরম পুরনে কিছু টাকা কম নেওয়ার জন্য আমার মেয়েকে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করতে বলেছি। কিন্তু অধ্যক্ষ এই সুযোগে আমার মেয়েকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে। তাই জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিলাম দেখি ওনারা কি করেন।
ভুক্তভোগী ওই এইচএসসি পরিক্ষার্থী বলেন, এমন নেককারজনক কাজের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আমরা সহপাঠীদের নিয়ে রাস্তায় নামবো।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে ওই অধ্যক্ষের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে বাড়িতে, অফিসে কোথায় পাওয়া যাচ্ছে না।, এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ রবিউল আলমের মন্তব্য জানতে তার ব্যবহারিত মোবাইলে নম্বরে কল করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বিষয়টির কার্যকর ব্যবস্থা নিতে লালমনিরহাট পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।