রাঙামাটিতে বাজার ইজারার টেন্ডার নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের দক্ষিণ কালীন্দিপুর মুখে রাঙামাটি বাজারফান্ড কার্যালয়ে পাহারা বসিয়ে একদল টেন্ডারবাজ সাধারণ ব্যবসায়ীদের দরপত্র সংগ্রহে বাধা দিলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল উপস্থিত হলে টেন্ডারবাজরা অবস্থান ত্যাগ করে চলে যান। এর আগে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৫৮টি বাজারের ইজারার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বাজারফান্ড প্রশাসন।
জানা যায়, ওই সময় পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ টেন্ডারবাজদের আদলে দরপত্র সংগ্রহে বাধা দিতে পাহারা বসান বেশকিছু সংখ্যক লোকজনের একদল টেন্ডারবাজ। তাদের বাইরে যাতে কেউ দরপত্র সংগ্রহ করতে না পারে সেজন্য বাজারফান্ড কার্যালয় ঘিরে বসানো হয় পাহারা। এ সময় সাধারণ ইজারাদারদের দরপত্র কিনতে বাধা দেওয়া হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ ঘটনায় বিএনপির জেলা ও উপজেলা নেতাকর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার ওরফে দীপু বলেন, টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে দলীয় নির্দেশনা জিরো টলারেন্সে। তাই এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে সবাইকে কঠোর সতর্কতা দেওয়া আছে। দলের কেউ টেন্ডারবাজিতে জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপিতে টেন্ডারবাজির কোনো স্থান নেই। রাঙামাটিতে যেকোনো টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিও আহবান জানান তিনি।
রাঙামাটি বাজারফান্ড কার্যালয়ের প্রধান সহকারী অসিত কুমার চাকমা বলেন, আমি এসবের কিছুই জানি না। এ ধরনের কোনো ঝামেলাও হয়নি। সেনাবাহিনীর লোকজন কেন এসছেন তাও বলতে পারি না। সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতির মতো কিছুই ঘটতে দেখিনি।
তিনি বলেন, বাজারফান্ডের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলো ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ইজারা দিতে বিজ্ঞপ্তির আহবান করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগ্রহীদের কাছে দরপত্র বিক্রয় চলছে। জমা দেওয়ার তারিখ ১৮ মার্চ অফিস চলাকালীন সময়ে। এদিনই দরপত্রদাতাদের উপস্থিতিতে বাক্স খোলা হবে।
বাজার ফান্ড কার্যালয়ের তথ্য মতে জানা যায়, গত রবিবার সকালে রাঙামাটি জেলার মধ্যে প্রায় ৫৮টি বাজারের ইজারা দরপত্রের শিডিউল বিক্রয় প্রথম দফা শুরু হয়েছে। কিন্তু শিডিউল বিক্রয় করতে বাধা প্রদান করছে বিএনপি ও জেএসএস কর্মীরা। এই খবর জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়লে তুলকালাম শুরু হয় শহরজুড়ে। এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী আসতে দেখে সবাই পালিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে রাজু বড়ুয়া ও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ২ জন লোক শিডিউল বিক্রয় করতে গেলে তাদেরও শিডিউল বিক্রয় করতে দেয়নি বিএনপি ও জেএসএস কর্মীরা। সকাল থেকে বাজার ফান্ড কার্যালয় ঘিরে রেখেছে শিডিউল সিন্ডিকেটরা অনেকেই শিডিউল কিনতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বাজার ফান্ড কার্যালয়ের প্রধান সহকারী অসিত কুমার চাকমা বলেন, আমি কিছুই জানি না। এখানে কোন ঝামেলা হতেও আমি দেখিনি। সেনাবাহিনী কেন আসছে তাও আমি বলতে পারি না। এখানে আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি ঘটতে আমি দেখিনি।
জেলা বিএনপি’র সভাপতি দীপন তালুকদার ওরফে দিপু বলেন, টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। কেউ টেন্ডারবাজি করছে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে জেলা বিএনপি কঠোর ব্যবস্থা নেবে। অভিযোগটি সম্পূর্ণ অসত্য। বিএনপিতে যারা টেন্ডারবাজি করবে তাদের কোনো স্থান নেই।