ঢাকা সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

লেবু চাষে সফল শাহিন, ৭ দিনেই ৪ লাখ টাকা বিক্রি

গোপাল অধিকারী, ঈশ্বরদী
প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম

লেবু চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন শাহিনুজ্জামান শাহিন। দুই বছরের মাথায় এই রমজান মাসের প্রথম ৭ দিনেই ৪ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন। ২৫ রোজার মধ্যেই ৭ লাখ টাকার বেশি লেবু বিক্রির লক্ষ্য পূরণ হবে বলে আশাবাদী এ চাষি।

লেবু চাষি শাহিনুজ্জামান শাহিন পাবনার ঈশ্বরদীর সাহাপুরের মহাদেবপুর গ্রামের ইমান সরদারের ছেলে।

উপজেলার মানিকনগর গ্রামে শাহিনের লেবু বাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গাছের সবুজ পাতার মাঝে উঁকি দিচ্ছে থোকায় থোকায় লেবু। বাজারজাত করার জন্য শ্রমিকরা লেবু সংগ্রহ করছেন। লেবু বাগানের বয়স ২ বছর। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ বাগান থেকে লেবুর ফলন পাওয়া যাবে। পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে মরিচ, কলা, কাকরসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করেছেন তিনি।

লেবু চাষের পাশাপাশি তিনি পেঁয়াজ, গাজর, বেগুন, মুলা, কলা ও ক্যাপসিকাম চাষ করেন। এরই মধ্যে সফল চাষি হিসেবে ২০২৩ সালে কৃষিতে জাতীয় পদক অর্জন করেন।

স্থানীয় ডেইরি খামারি আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার গরুর খামার আছে। পাশাপাশি চাষাবাদ করি। শাহিনুজ্জামান ভাইয়ের লেবু বাগানে ভালো ফলন হয়েছে। লেবু চাষ সম্পর্কে তার কাছ থেকে পরামর্শ ও ধারণা নিচ্ছি। আমার মতো অনেকেই বাগান দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন। তার লেবু চাষের সফলতা এলাকার কৃষকদের মাঝে উৎসাহ জুগিয়েছে।

চাষি শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘দশ বিঘা জমিতে ১ হাজার চায়না-থ্রি ও দেশি জাতের লেবু বাগান করেছি। রমজান মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছি। আরও ৩ লাখ টাকার লেবু বিক্রির আশা আছে। সবমিলিয়ে ৭ লাখ টাকার লেবু বিক্রি হবে। পাশাপাশি চৈত্র ও বৈশাখ মাসে ২০- ২৫ লাখ টাকার লেবু বিক্রি হতে পারে। বছরের অন্য আট মাসে ৩০ লাখ টাকাসহ বছরে ৬০ লাখ টাকা বিক্রির আশা আছে।’

তিনি বলেন, ‘দশ বিঘা জমিতে লেবুর বাগান করতে খরচ হয়েছিল দেড় লাখ টাকা। বাগান পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ ও শ্রমিক খরচে প্রতি বছর ব্যয় হয় প্রায় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। সাথী ফসল বিক্রি করে পরিচর্যার ব্যয় অনেকটাই ফেরত আসে। বাগানে চায়না-থ্রি ও দেশি কাগজি লেবু বেশি চাষ হয়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, এখানকার মাটি লেবু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। চায়না-থ্রি ও থাই লেবু উৎপাদনের পরিমাণ দেশি কাগজি লেবুর চেয়ে অনেক বেশি। বিশেষ করে রমজান মাসে লেবুর চাহিদা বেশি থাকে। শাহিনকে বিএডিসির সেচ বিভাগ থেকে সৌরশক্তি চালিত ডাগওয়েল (পাতকুয়া) সরবরাহ করায় খরা মৌসুমসহ কখনোই গাছে পানির সমস্যা হচ্ছে না। যে কারণে তিনি সব সময় ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।