ঢাকা সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

রেশন কার্ডের চালের বস্তায় শেখ হাসিনার নামে স্লোগান

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে দুঃস্থদের মাঝে ১০কেজি চাল বিতরণের বস্তায় ও ৩০কেজি রেশন কার্ডের চালের বস্তায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম দেখা গেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে (১৬ ও ১৭ মার্চ) দেখা যায়, জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নে ১৫০০জন দুঃস্থদের মাঝে ১০কেজি ও রেশন কার্ডের ৩০কেজি চাল বিতরণ হয়।

তবে বিতরণ করা ৩০ কেজি ওজনের চালের বস্তায় ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ স্লোগান দেখা যায়।

কিছু বস্তায় কালো রঙের হালকা কালি দিয়ে লেখাটি ঢাকার জন্য দিলেও স্পষ্ট লেখাটি দেখা যাচ্ছে এবং অধিকাংশ স্থানের বস্তায় লেখা বিদ্যমান ছিলো।

ভানোর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আলী রূপালী বাংরাদেশকে বলেন, চালের বস্তায় আমি লেখাটি দেখতে পেয়েছি। এটি তাদের দায়িত্বের অবহেলা।

বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাহাত চৌধুরী বলেন, সরকারি চাল এ দেশের নাগরিকদের ভ্যাট ট্যাক্সের টাকায় দেওয়া হয়। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ৮মাস পতনের পরেও চালের বস্তায় তার নাম থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। খাদ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ জানাই তারা দ্রুত যেন এই বস্তাগুলো বন্ধ করে দেয়। অন্যথায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলে এর দায়ভার রাষ্ট্র কিংবা জনগণ নেবে না।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ইলিয়াস আলী হৃদয় বলেন, কিছু কিছু আমলা ও সরকারি কর্মকর্তা এখনও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নির্দেশে দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছেন। এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মকর্তা ও হাসিনার দোসরদের চাকরি থেকে অব্যহতি দিয়ে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা এলএসডি মো. কামরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, বিগত সরকার থাকাকালে বিভিন্ন সময়ে বস্তাগুলো কেনা হয়েছিলো। সেই সময় কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই লেখাটি লেখা ছিলো। ৫ আগস্ট সরকারের পরিবর্তনের পর নতুন সরকারের নির্দেশ ছিলো বস্তা থেকে লেখাগুলো মুছে দেওয়া। আমি দাড়িয়ে থেকে লেবারদের লেখাটি কালো কালি দিয়ে মুছে দিতে বলি। তবে এতগুলো বস্তার মধ্যে ২/১ টা বস্তায় থেকে যেতে পারে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (চঃদাঃ) অর্পনা মৈত্র বলেন, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা স্যার প্রতিটি আলোচনা সভায় আমাদেরকে সতর্ক করছেন যেন ঐ লেখাটি না থাকে। আমিও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার এলএসডি কে সেই বার্তা দিয়েছি কালো কালির স্প্রে দিয়ে নামটি মুছে দেওয়ার জন্য। তিনি যদি লেখাটি না মুছে দিয়ে থাকেন তবে এ দায়ভার উনাকেই বহন করতে হবে। পরবর্তীতে চাল বিতরণের সময় এই নামটি মুছে না দিলে যারাই দায়িত্বে থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, আমি খবর নিয়ে দেখি। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তবে যাদের দায়িত্বের অবহেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।