ধর্ষণের শাস্তি জুতাপেটা, টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে মাতব্বররা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম

ধর্ষণের শাস্তি জুতাপেটা, টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে মাতব্বররা

প্রতীকী ছবি

ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা সুরাহা করতে সালিশে বসেন গ্রামের মাতব্বরা। বিচারে শাস্তি হিসেবে অভিযুক্ত বাবুল মিয়াকে জুতাপেটা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমান করা হয়। কিন্তু ভুক্তভোগীর পরিবার সালিশ মানতে নারাজ। তাই জোর করে ওই শিশুর নানির হাতে জরিমানার টাকা ধরিয়ে দেন মাতবররা।

সালিশের সিদ্ধান্ত না মানলে ভুক্তভোগীর পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয়। এদিকে জরিমানার পাঁচ হাজার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিপাকে পড়েন সালিশে উপস্থিত ছয় মাতব্বর। ঘটনাটি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার। গত ৫ জানুয়ারি শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।

ভুক্তভোগী শিশুটির নানি জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি গ্রামের মাতবরদের জানালে তারা সালিশ বৈঠক ডাকার পরামর্শ দেন। আর মাতবরদের কথা অমান্য করে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে ক্ষতি হতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এই ভয়ে ঘটনার ১৫ দিন পর সালিশ ডাকেন তিনি।

সেখানে বাবুলকে ছয়টি জুতার বাড়ি এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাবুলের পরিবার থেকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে– এ বিষয়ে মুখ খুললে গ্রামছাড়া করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ৬ জন মাতব্বর নিপীড়নের অভিযোগ ওঠা বাবুল মিয়ার কাছ থেকে নেয় পাঁচ হাজার টাকা। সেই টাকা আবার ছয় মাতব্বরের মধ্যে বণ্টন নিয়ে বাধে বিপত্তি। চার মাতব্বর নেয় এক হাজার টাকা করে এবং দুজনকে দেওয়া হয় ৫০০ টাকা করে। সমহারে টাকার ভাগ না পেয়ে মাতব্বররা একে অপরের বিরুদ্ধে তুলছেন অভিযোগ।

সালিশে থাকা একজন বলেন, সালিশের পর অভিযুক্তর কাছ থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহীন মিয়াসহ ছয় মাতবরের জন্য নেওয়া হয় আরও পাঁচ হাজার টাকা। সেই টাকা থেকে শাহীন, জাফর আলীর ছেলে বাবুল, সৈয়দ আলীর ছেলে বাবুল ও শাহজালাল নেন এক হাজার করে। বাকি এক হাজার টাকা দেওয়া হয় কবির ও সাগরকে।

এ বিষয়ে শাহীন বলেন, সালিশে জুরি বোর্ড পরিচালনা করেছেন ছন্দু মিয়া, রেনু মিয়া, সাগর, রাজু ও কবির। পরে বিচারের রায় অনুযায়ী অভিযুক্তকে তার বড় ভাই জুতাপেটা করেন এবং জরিমানার ৫ হাজার টাকা শিশুটির নানির হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি বলে জানান মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান।

আরবি/এসএমএ

Link copied!