চাল বিতরণে অনিয়ম: প্যানেল চেয়ারম্যানের লুকোচুরিতে ৩০০ ভিজিএফ কার্ড

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৫, ১১:৫০ পিএম

চাল বিতরণে অনিয়ম: প্যানেল চেয়ারম্যানের লুকোচুরিতে ৩০০ ভিজিএফ কার্ড

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের পাহাড়পুর ইউনিয়নের অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বরাদ্দকৃত ঈদুল ফিতরের উপহার (ভিজিএফ) চাল বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফের ১ হাজার ৪৫টি কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণ করা হওয়ার কথা ছিল।

সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১০ কেজি চালের মধ্যে ৮ কেজি থেকে ৯.৫ কেজির মতো চাল বিতরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দরিদ্রদের জন্য জনপ্রতি ১০ কেজি চালের হিসেবে ৩৪৮টি বস্তা পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের আনা হয় এবং সেই অনুপাতে ভিজিএফের ১ হাজার ৪৫টি কার্ডের মাধ্যমে ৯টি ওয়ার্ডে চাল বিতরণ করা হয়।

এসব কার্ড বিতরণে প্যানেল চেয়ারম্যান স্বজনপ্রীতি করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।

স্থানীয়রা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিতরণে সরকারি অনুমোদিত ১০ কেজি চালের কম অর্থাৎ ৮-৯.৫ কেজি করে পরিমাপে দিচ্ছে।

যারা স্বাবলম্বী ও তাদের চাল নেওয়ার দরকার নেই তারা কার্ডের মাধ্যমে চাল নিচ্ছে। মেম্বার-প্যানেল চেয়ারম্যানরা অনেককে একাধিক কার্ড দেন।

পরে তারা সে চাল নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিজয়নগর ১০নং পাহাড়পুর ইউনিয়নের দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফের চাল নেওয়ার জন্য ভিড় করছেন এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশের কার্ড নেই।

যাদের কার্ড আছে তাদের মধ্যে অনেকেরই একাধিক কার্ডের মাধ্যমে চাল নিচ্ছেন।

দরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য প্রত্যেক ইউপি মেম্বারদেরকে ৬৫-৭০টি করে চালের কার্ড দিয়েছেন বলে জানান একাধিক মেম্বার।

১ হাজার ৪৫টি কার্ডের মধ্যে প্রায় ৩০০টির অধিক কার্ড লুকোচুরির মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার নিজের কাছে রেখে দেয়।

বিতরণ শেষে ৩৩ বস্তা অর্থাৎ ৯৯০ কেজি চাল অবশিষ্ট রয়ে যায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়।

পরবর্তীতে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানার জন্য ফোন করলে প্যানেল চেয়ারম্যান ও সচিব জানান চাউল বিতরণ শেষ হয়েছে।

চাল কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল (২) চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার বলেন, ‘হয়তো মাপে উঁনিশ বিশ হইতে পারে আর নয়তো শত্রুতা করে একটি চক্র; পরিষদ থেকে চাল নিয়ে বের হয়ে এর থেকে যদি কিছু সরিয়ে ফেলে মাপে কম বুঝানোর জন্য সেটা তো আর আমি জানি না। 

বর্তমানে নির্বাচিত চেয়ারম্যান নাই, প্যানেল চেয়ারম্যান আছে। আমার প্রতি অনেকের শত্রুতা ও আক্রোশ আছে।

এছাড়াও বিতরণের পর ৩০ বস্তা চাল অবশিষ্ট থাকা এবং ৩০০টির অধিক কার্ড চেয়ারম্যানের কাছে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেয়।

এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধনা ত্রিপুরা জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!