নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে চনপাড়া পুনর্বাসনকেন্দ্রে চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হাসিব নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় অন্তত ১৩ জন। মঙ্গলবার ১৮ মার্চ রাতভর দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, চাঁদাবাজি,টেন্ডারবাজি ও ড্রেজার ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে বেশকিছু দিন ধরে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক ও চনপাড়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা শামিম মিয়ার বিরোধ চলছিল।
মঙ্গলবার রাতে এ দিয়ে উভয়গ্রুপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। সংঘর্ষে রাব্বানী, শাকিল, রাজ্জাক, রমজান, জীবন সানী, দারোয়ান বাবুসহ ১০ জন আহত হয়। এ সময় উভয়পক্ষের সংঘর্ষে হাসিব নামে এক যুবদল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতভর সংঘর্ষে ঘটনায় বুধবার সকালে পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অভিযান চালায়। এ সময় উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র। সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রূপগঞ্জের বিষফোড়া নামে খ্যাত চনপাড়া পুর্নবাসন কেন্দ্র। এখানে অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি সহ সকল অপরাধ কর্মকাণ্ড চলে দিনে-রাতে।
বিশেষ করে গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চনপাড়াকে কেন্দ্র করে অন্তত ৮-১০টি সন্ত্রাসী গ্রুপের উৎপত্তি হয়। এসব গ্রুপের কাজ হচ্ছে সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আতংক সৃষ্টি করা আর। নিজেদের ক্ষমতাশালী দাবি করা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে পূর্নবাসন কেন্দ্রে সেচ্ছাসেবকদল নেতা রাব্বানী, করিমের পক্ষের রবিনের সাথে যুবদল নেতা শামীম পক্ষ শাহীনে ঝগড়া হয়।
এ ঘটনার জের ধরে ৮ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি মনির ও তার লোকজন নিয়ে রবিনকে তুলে নিয়ে শামীমের অফিস আটকে রেখে মারধর করে।
বিষয়টি জানতে পেরে ভোর সাড়ে ৩ টারদিকে রাব্বানী ও করিমসহ তাদের লোকজন শামীমের অফিসে রবিনকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে শামীমও তার লোকজনের সাথে তাদের সংঘর্ষে বাধে।
পরে উভয় পক্ষের গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় সেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী হাছিবুর, রাসেল ও বাশারসহ কমপক্ষে ১০ জন।
পরে গুরুতর অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হাছিবুর। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।