বরিশালের কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ সচিবকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করাসহ সরকারি সহায়তার স্লিপ জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বহিষ্কার হয়েছেন স্থানীয় তিন বিএনপি নেতা।
গতকাল বুধবার সদর উপজেলার নেতারা ২ নম্বর কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হক শিকদার এবং যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেনকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি তাদের সাগরেদ একই ওয়ার্ডের যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ হাওলাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে যুবদলের উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মাথায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করল বরিশাল সদর বিএনপি।
এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম সাবু এবং সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম সেলিম মোল্লা। বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে কাশিপুরের যুবদল নেতাসহ দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব ওয়াশিম খান রূপালী বাংলাদেশকে জানান, গত রোববার বেলা ১১টার দিকে বিএনপি নেতা মো. দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে অন্তত ১৫-২৫ জনের একটি বহর বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ করে হম্বিতম্বি শুরু করে।
একপর্যায়ে পরিষদ সচিব আব্দুল করিমকে চাপ প্রয়োগ করাসহ অসহায় ও দরিদ্রদের জন্য সরকারের দেওয়া ভিজিএফ সহায়তার স্লিপ নিয়ে যেতে চায়। এতে বাধা দিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পরিষদ সচিবসহ গ্রাম পুলিশকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। শেষ পর্যন্ত জোরপূর্বক ৪০০ স্লিপ নিয়ে যেতে সক্ষম হন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এই অপকর্মের দুই দিন বাদে বিস্তারিত তুলে ধরে রূপালী বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশের পরপরই অভিযুক্ত তিন বিএনপি-যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তির খড়্গ নেমে এলো।
অবশ্য এর আগে সংবাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়ই বরিশাল সদর উপজেলার আহ্বায়ক ও চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম সাবু সাফ জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই নেতার কথা এবং কাজের সঙ্গে মিল পাওয়ায় তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কাশিপুর ইউনিয়নবাসী।
যদিও বিএনপি নেতাদের জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া স্লিপগুলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বরিশাল সদর উপজেলা প্রশাসন। কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুল করিম জানান, নতুন স্লিপ তৈরি করে খুব শিগগিরই দরিদ্র মানুষের উপহারসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।
বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, বিএনপির পরিচয়ে অপকর্ম করার কোনো সুযোগ নেই। তার পরেও যদি কেউ জড়িয়ে পড়েন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যেমনটি শাস্তি পেয়েছেন কাশিপুরের তিন নেতা। বরং এ থেকে সবাইকে শিক্ষা নেওয়া উচি বলে মন্তব্য করেন তিনি।