মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আলোচিত সেই আট বছরের শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখের বিচার চাইলেন তার নিজ মা।
বুধবার (১৯ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা বাড়ির পাশের খালি জায়গায় প্লাস্টিকের চটের ওপর একা বসে আছেন হিটু শেখের মা রোকেয়া বেগম ৭৫।
এর আগে গত ১৩ মার্চ হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু আছিয়া মারা গেলে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ছাড়াও পেট্রল ঢেলে করা হয় অগ্নিসংযোগ।
যার চিহ্ন বাড়িটি দেখলেই বোঝা যায়। পোড়া স্তূপ আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভাঙা দেয়ালের অংশ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এমনকি বাড়ির আঙিনায় থাকা মেহগনি, বরই, আমড়া, আম, কাঁঠাল, তেঁতুল, লিচু ও কাঠ জাতীয় অনেক গাছ কেটে নিয়ে গেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
হিটু শেখের মায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মিত বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরের টিনের চাল, লোহার দরজা, খাট, ফ্যান, জামাকাপড় সব নিয়ে গেছে বিক্ষুব্ধরা।
ফলে তার থাকার কোনো জায়গা নেই। তাই সারাদিন এভাবে খালি বাড়িতে একা একা চট পেতে বসে থাকেন। প্রতিবেশীরা কিছু দিলে খায় না দিলে অনাহারে থাকতে হয়। রাতে যখন আশপাশ নির্জন হয়ে যায় তখন তিনি পাশের বাড়িতে গিয়ে ঘুমান। সকাল হতেই আবারও এই চটের ওপর বসে থাকতে হয়।
জানতে চাইলে হিটুর মা রোকেয়া বেগম আরও বলেন, ছেলের এই অপকর্মের জন্য তার এমন হাল। মাথার ওপর এখন কোনো ছাউনি নেই। কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে থাকতে হয়। কেউ সাহায্য করতে চায় না আমাকে।
তিনি বলেন, ‘তবে কেউ যদি আমারে এখানে থাকার কোনো ব্যবস্থা কইরে দেয় তাইলি আমার জন্য এট্টু সুবিধা হয়।’
তা না হলে আর কিছু করার নেই। টাকা-পয়সা নেই যে আমি নিজে কিছু একটা করব। সামনে আসছে ঝড়-বৃষ্টির দিন। আমি কোথায় গিয়ে থাকব? ছেলের অপকর্মের জন্য কেউ আমাক থাকার জায়গা দিচ্ছে না।
তবে নিজে সবকিছু খোয়ালেও ছেলের অপকর্মের জন্য তিনি বিচার চান।
এ বিষয়ে রোকেয়া বেগম বলেন, আমার ছেলের অপকর্মের জন্য আমি বিচার চাই। তারে জবাই করে দিলেও কিছু বলব না। ওই মেয়েটার যে অবস্থা হয়েছে, আমার ছেলেরও একই অবস্থা হোক। শিশুটির মতো সেও কবরে যাক। যে অন্যায় করেছে তার শাস্তি চাই। কিন্তু আমার নাতিদের কোনো দোষ নেই।