ঢাকা শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫

ঈদ বাজারে উপচে পড়া ভিড়, শপিংমলে কেনাকাটার ধুম!

ফজলুল করিম, ফটিকছড়ি
প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৫, ০৪:৫৪ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মাহে রমজান প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই, ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে ফটিকছড়ির ছোট-বড় সব শপিংমল, মার্কেট ও স্থানীয় দোকানগুলোতে রাত দিন করে চলছে কেনাকাটার উৎসব।

এসব বাজার ও শপিংমলে সব বয়সী মানুষের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। ইফতার আর নামাজের বিরতি ছাড়া মোটামুটি সব ক্ষেত্রেই ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে রমজানের প্রথম সপ্তাহে চাকরিজীবীরা বেতন হাতে পাওয়ায় এ বছর রমজানের শুরু থেকেই শপিংমল ও বাজারগুলোতে ঈদের কেনাকাটার বাড়তি চাপ দেখা গেছে।

এবার বাজারগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে পিছিয়ে নেই অনলাইন প্লাটফর্মগুলো। এখন অনলাইন হতে অর্ডার করা পণ্যের পার্সেলটি একেবারে ক্রেতার ঘরের সামনে হাতে-হাতে ডেলিভারি দিচ্ছেন সবকটি প্রতিষ্ঠান।

ফলে দিনদিন অনলাইন প্লাটফর্মে ক্রেতার আস্থা বাড়ার সাথে সাথে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ছে। বিশেষ করে নামিদামি কোম্পানিগুলোর অনলাইন প্লাটফর্ম থাকায় কেনাকাটায় আগ্রহী হচ্ছেন ক্রেতারা।

এক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হতে কেনাকাটায় এগিয়ে রয়েছে মহিলারাই। কেননা রমজানে মহিলাদের কাজ কিছুটা বেশি। সব সামলিয়ে শপিংমলে গিয়ে দোকানে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটার ঝামেলা হতে অনলাইনে মোবাইল স্ক্রিনে পছন্দের পণ্য চয়েস করে তা অর্ডার করে মাত্র ২-৪দিনের মধ্যে পণ্যটি হাতে পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের হেঁয়াকো এলাকার বাসিন্দা (শিক্ষার্থী) ফাতেমা তুজ্জোহরা ইকরা বলেন, এবার ঈদের কেনাকাটার জন্য আমি অনলাইন প্লাটফর্মকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছি।

কেননা অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো ধীরে ধীরে গ্রাহকদের আস্তা অর্জন করছে। ঘরে বসে বিভিন্ন পেইজ ও ওয়েব সাইডে বাহারি ডিজাইনের নানান পণ্য হতে পছন্দ করা যায়। আমি এবারের ঈদের জন্য পছন্দের কাপড়টি অনলাইন থেকে নিয়েছি এবং আমার বেশ কিছু সহপাঠীরাও একই পথ অনুসরণ করেছে।

এদিকে ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর, নারায়ণহাট ও দাঁতমারা ইউনিয়নে যথাক্রমে কাজিরহাট বাজার,নারায়ণহাট বাজার ও হেয়াঁকো বাজার এবং ফটিকছড়ি সদর, নাজিরহাট বাজার, নানুপুর বাজার ও আজাদী বাজারের বিভিন্ন মার্কেট হতে প্রতিবছরের মতো উপজেলাবাসী ঈদে কেনাকাটা করে থাকেন।

সরেজমিনে এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে বাহারি জামা, শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, সোনামনিদের বাহারি ডিজাইনের কাপড়, থানকাপড়, বিছানার চাদর, পর্দার কাপড়সহ সব ধরনের কাপড়ের বিকিকিনি চলছে।

প্রায় সব মার্কেটে ভারতীয় বাহারি ডিজাইনের শাড়ি, সুতোর কাজ করা কাপড়, টিস্যু, চুমকি ও ব্লক-বাটিকের কাপড়ে নজর বেশি ক্রেতাদের।

তরুণীদের বাহারি নকশার থ্রিপিস- যার মধ্যে পাকিস্তানি থ্রিপিসের মধ্যে অর্গানজা, বিন হামিদ, বিন সাঈদ, নূরস, তাওয়াক্কাল, লেভিস ইত্যাদির চাহিদা বেশি বলে জানা যায়। তবে, ফটিকছড়িতে বরাবরই জামদানি শাড়ির চাহিদা বেশি থাকে। কেননা এই শাড়িটি সব শ্রেণির মানুষের ক্রয়ের সাধ্যের মধ্যে পাওয়া যায়।

কাজিরহাট বাজারের আবছার ফ্যাশন পার্কের মালিক মুহাম্মদ আবছার জানান,ঈদকে কেন্দ্র করে রোজার অনেক আগে থেকে আকর্ষণীয় মালামাল সংগ্রহে রেখেছি।

আলহামদুলিল্লাহ, ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। গতবছরের চেয়ে এবছর ব্যবসা এখন পর্যন্ত ভালো হচ্ছে। বাকিটা আল্লাহর উপর ভরসা।

ফটিকছড়ি বাজারের ব্যবসায়ী এমদাদ চৌধুরী জানান, ফটিকছড়ি বাজার হচ্ছে ফটিকছড়ি সদর ও উত্তরের একটি বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। অন্যান্য বছরের চেয়ে চলতি বছর বাজারে ঈদ ব্যবসা অনেক বেড়েছে।

ফটিকছড়ির বিবিরহাট বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, আলহামদুলিল্লাহ, ঈদ কেন-কোটার বাজার অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক ভাল।

ক্রেতাগণ যাতে সাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারেন,তাই বাজারের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের সার্বক্ষণিক তদারকি রয়েছে।

ফটিকছড়ি থানার ওসি নূর আহমদ গণমাধ্যমকে জানান, বাজারে জমজমাট কেনাকাটার পাশাপাশি বখাটে, ছিনতাইকারীরাও সরব থাকে। তাই আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সদা প্রস্তুত রয়েছি।

এ ব্যাপারে তদারকি বাড়িয়েছি এবং উপজেলার বড় বাজারগুলোর ব্যবসায়ীদের সাথেও আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। বিশৃঙ্খলাকারী ও অপরাধীদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না।