ঢাকা সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫

গৃহবধূর নিথরদেহ ঘরে রেখে পালিয়েছে স্বামীর পরিবার

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ০৮:৩২ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চরফ্যাশনে সাদিয়া বেগম (২৩) নামে দুই সন্তানের জননী এক গৃবধুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় ওমরপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় গৃহবধুর স্বামীর বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত গৃহবধু ওই গ্রামের নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী এবং লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের কর্তার হাট এলাকার আবদুল মালেকের মেয়ে।

প্রতিবেশীরা জানান, ওই গৃহবধুকে ঘরে রেখে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত গৃহবধুর মা ইয়ানুর বেগম জানান, ১০ বছর আগে ওমরপুর ইউনিয়নের মৃত শফিউল্লাহর ছেলে নাজিম উদ্দিনের সাথে তার মেয়ের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ছয় বছর বয়সী জুনাইদ ও তিন বছর বসয়ী সামিয়া নামের দুই সন্তান রয়েছে।

দুই সন্তান জম্মের পর জামাতা নাজিম উদ্দিন পরকিয়ার আসক্ত হয়ে এক নারী সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক বছর আগে ওই নারীকে গোপনে বিয়ে করেন। চলতি বছরের গত চার মাস আগে বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারক কলাহ শুরু হয়।

এ নিয়ে জামাতা নাজিম উদ্দিন প্রায় সময় তার মেয়েকে অমানুষিক নির্যাতন করতো। প্রায় এক বছর যাবত জামাতা নাজিম উদ্দিন দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে ঢাকায় অবস্থান করে আমার মেয়েকে দুই সন্তান নিয়ে সংসার থেকে বিতারিত করতে স্বামীর (জামাতা) ইন্দনে তার শাশুড়ি রাজিয়া বেগম, ননদ নাজমা, আকলিমা, তাসলিয়া ও দেবর নুরে আলম প্রায় সময় তাকে মারধর করতো। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন সইতে না পেয়ে মেয়ে বিষপান করেন।

পরে জামাতার পরিবারের সদস্যরা মেয়ে সাদিয়াকে ঘরে ফেলে রেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তারা প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদিয়ার মৃত্যু হয়। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী করছি।

নিহত গৃহবধুর বড় ভাই নাজিম উদ্দিন জানান, বোনের স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর প্রায় সময় তাকে মারধর করতো। এসব বিষয় বোন সাদিয়া তাকে প্রায় সময় মুঠোফোনে জানাতো। শনিবার তাকে মারধরের পর বোন বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন।আমার বোনের হত্যকারীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানাই প্রশাসনের কাছে।

গৃহবধুর স্বামীর পরিবারের সদস্যরা ওই গৃহবধুকে ঘরে রেখে পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে সুরাতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারন জানা যাবে।