বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

বোম্বাই মরিচ চাষে লাখোপতি কৃষক রহিম

আরিফ হোসেন, চরফ্যাশন, ভোলা

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ১১:৫৯ এএম

বোম্বাই মরিচ চাষে লাখোপতি কৃষক রহিম

বোম্বাই মরিচ চাষে লাখোপতি কৃষক আ. রহিম। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কৃষক আ. রহিম চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নে উত্তর চর মাদ্রাজ গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে বিভিন্ন ধরনের শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি ছয় বছর আগে সীমিত পরিসরে বোম্বাই মরিচের চাষ শুরু করেন। মরিচ চাষে লাভবান হওয়ায় পর্যায়ক্রমে এর পরিধি বাড়িয়ে বর্তমানে চার একর জমিতে মরিচের চাষ করছেন।

২০২৩ সালে সামান্য লাভ হলেও ২০২৪ সালে চার একর জমিতে এক লাখ টাকা ব্যয়ে বোম্বাই মরিচ চাষ করে ১৬ লাখ টাকা আয় করেছেন। তার ধারণা, এই বছর মরিচের ফলন ভালো হওয়ায় লাভের পরিমাণ বেড়ে ১০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৪ একর জমিতে বিস্তীর্ণ বোম্বাই মরিচ গাছ। মনোমুগ্ধকর সবুজের সমারোহ। প্রতিটি গাছে ধরে আছে শত শত ছোট বড় মরিচ। যা, বিক্রির উপযোগী। মরিচ তোলার কাজ করেন স্থানীয় তিন শ্রমিক। তাদের পাশাপাশি নিজের বাগানের প্রতিটি মরিচ গাছের পরিচর্যা করেন তিনি।

কৃষক আ. রহিম জানান, উপজেলার এওয়াজপুর এলাকার এক কৃষকের কাছ থেকে সে বোম্বাই মরিচ চাষাবাদের পরামর্শ নিয়ে ছয় বছর আগে তার নিজের এলাকায় জমি লগ্নি নিয়ে মরিচের চাষাবাদ শুরু করেন। এই বছর দুইবার মরিচ সংগ্রহ করে দশ মণ মরিচ বিক্রি করেছেন। তাতে এক লাখ টাকা আয় হয়েছে। ঈদের পরে মরিচের দাম বৃদ্ধি পাবে, তখন মরিচ বিক্রি ১০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা তার।

তিনি বলেন, ‍‍‘অগ্রহায়ণের প্রথমেই বোম্বাই মরিচের চারা রোপণ করা হয়। তিন মাস পর গাছে মরিচ ধরা শুরু করে। তবে বর্ষার মৌসুমে গাছের গোড়ায় পানি জমাটবদ্ধ না থাকলে পুরো গাছ বছরের শেষ অব্দি রাখা যায়। এ ছাড়াও বর্ষার মৌসুমে মরিচের ফলন কম হওয়ায় তখন দামও ভালো পাওয়া যায়।‍‍’

চর মাদ্রাজ এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, দেশে বিভিন্ন জাতের প্রচলিত মরিচের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় বোম্বাই মরিচ। অঞ্চল ভেদে বোম্বাই মরিচের ভিন্ন নামও রয়েছে। ফোটকা মরিচ, নাগা মরিচ নামেও পরিচিত। অন্য জাতের মরিচের চেয়ে স্বাদে গন্ধে ভিন্নতা থাকায় খাবারে ব্যবহার করেন অনেকেই। কম পুঁজিতে অধিক মুনাফা পাওয়ায় চলতি মৌসুমে চরফ্যাশন উপজেলায় কৃষকরা অন্য ফসলের পাশাপাশি বোম্বাই মরিচ চাষ করেছেন। তবে কৃষক আ. রহিম বোম্বাই মরিচ চাষাবাদ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন।

আড়ত মালিক মো. ইউনুচ বলেন, ‍‍`আমরা বোম্বাই মরিচ ক্রয় করি না। কৃষকরা আমাদের আড়তে বিক্রির জন্য রেখে যান। আমরা বিক্রি করে কৃষককে টাকা দিয়ে দেই। তবে দাদন নেওয়া কৃষকদের থেকে শতকরা ৮ টাকা কমিশন নেই। দাদন ব্যতিত শতকরা ৪ টাকা নেই।‍‍`

এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল হুদা বলেন, কৃষক আ. রহিম বোম্বাই মরিচ চাষে সফল হয়েছেন। তার দেখাদেখি আরো অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন অপ্রচলিত এই ফসল চাষে। বোম্বাই মরিচ চাষ করে বেকার যুবকরা যাতে আত্মকর্মসংস্থান করতে পারে তার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করব।

এ ছাড়াও উপজেলা কৃষি অফিস তাকে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

আরবি/জেডআর

Link copied!