মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

দাগনভূঞায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ১১:০২ পিএম

দাগনভূঞায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দাগনভূঞার বিভিন্ন বিপণি বিতান গুলোতে শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা।

এবারও কাপড়ের দোকানগুলোতে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতার সমাগম বেশি।

ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, তত বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। দাগনভূঞা পৌর শহরে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এ ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উপজেলার অন্যান্য বাজার গুলোতেও ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ব্যবসায়ীরা তাদের মার্কেট ও দোকানগুলো বর্ণিল সাজে সাজিয়েছেন।

দাগনভূঞা পৌর শহরের ইসহাক শপিং কমপ্লেক্স, এফটিসি সিটি সেন্টার, আতাতুর্ক স্কুল মার্কেট, সুলতান সুপার মার্কেট, আরবি প্লাজা, হিরণ মার্কেট ও তৈয়বা মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, এসব মার্কেটে কাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাসাধারণের ভিড় চোখে পড়ার মতো।

পাশাপাশি ফুটপাতের মৌসুমি ও ভ্রাম্যমাণ দোকানে নিম্নবিত্ত মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। কাপড় দোকানের পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক্স দোকানেও কেনাকাটা করছে ত্রেতাসাধারণরা।

অপরদিকে পৌর শহরের বাহিরে উপজেলার সিলোনিয়া বাজার, গজারিয়া বাজার, কৌরশমুন্সি বাজার, দুধমুখা বাজার, ফাজিলেরঘাট বাজার ও দরবেশের হাট বাজারেও ক্রেতাসমাগম রয়েছে।

মফস্বলের এসব বাজারের বিপণী বিতান গুলোতেও কেনাকাটা হচ্ছে চোখে পড়ার মতো।

দাগনভূঞা ইসহাক মার্কেটর পরিবার নিয়ে কাপড় কিনতে আসা স্কুল শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তার শিমু জানান, ঈদের চার-পাঁচ দিন আগে বাজারে অতিরিক্ত ভিড় থাকে।

এ ঝামেলা এড়াতে তারা আগে ভাগে সেরে নিচ্ছেন ঈদের কেনাকাটা। পছন্দের পণ্যটি নিয়ে খুশিমনে ফিরছেন তারা।

তবে ওই শিক্ষিকার অভিযোগ, এবার পোশাকের দাম তুলনামূলক গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি।

অপরদিকে রমজানের এ সময় ক্রেতাদের এমন সমাগম দেখে ঈদে ভালো বিক্রির আশা করছেন বিক্রেতারা।

ভারতীয় ভিসা জটিলতায় এবার ঈদকে ঘিরে ছেলেমেয়েদের পোশাকের মধ্যে পাকিস্তানি ব্র্যান্ড দখলে নিয়েছে।

মেয়েদের পাকিস্তানী পেশওয়ারি, সোফিয়া, আঘানুর, আনজারা, আরোমা, জাইফা, জাকুমিরা, রাজবাড়ি, তাওয়াক্কাল, মাশহু, ইয়াশনা, বিনহামিদ, মাশাল, আল জোয়াব, আলিয়া কাট, নায়রা, আলিফ-লায়লা এবং ছেলেদের পোশাকের মধ্যে নবাবী পাঞ্জাবী, বোম্বে সিল্ক, সিকোয়েন্স, সুলতান ও সুলতান কিং পাঞ্জাবি এবার বেশি সাড়া ফেলেছে বলে জানান বিক্রেতারা।

এফটিসি সিটি সেন্টারের সভাপতি নিজাম উদ্দিন হায়দার জানান, এ বছর ট্রেন্ডিংয়েন শীর্ষে থাকা ছেলেদের নবাবী, শাহাজাদা ও সিকোয়েন্স পাঞ্জাবি ১ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।  

ইসহাক মার্কেটের ব্যবসায়ী শেকান্তর হোসেন জানান, এ বছর মেয়েদের পোশাকের মধ্যে ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে থাকা পাকিস্তানি পেশওয়ারি আগানুর, কোকো, তাওয়াক্কাল, মাশহু, বিনহামিদ, আল জোয়াবের চাহিদা বেশি। তাঁর দোকানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়।

সুলতান মার্কেটের ব্যবসায়ী একরামুল বলেন, ‘এবার ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পোশাক রেখেছি। রোজার শুরু থেকে ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে। এসব ক্রেতার মধ্যে ৮০ শতাংশ নারী। আশা করছি, এবার বিক্রি ভালো হবে। ক্রেতারা রাত ১২টা পর্যন্ত কেনাকাটা করেন।’

এদিকে পোশাক ও কসমেটিকসের পাশাপাশি বেড়েছে জুতা ও স্যান্ডেলের বিক্রি। ছোট-বড় সবাই আসছেন সাধ্যের মধ্যে পছন্দমতো জুতা ও স্যান্ডেল কিনতে।

দামি ব্র্যান্ডের দোকানের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।

আইবিডব্লিউএফ দাগনভূঞা পৌর শাখার সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন জানান, ঈদকে সামনে রেখে যাতে ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন এবং ক্রেতাসাধারণগন যাতে কোন হয়রাণীর শিকার না হয় সে জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট এন্ড বিজনেসম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সকল সদস্য ও বাজারের ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছে।

বাজারে যাতে কোন অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য আইবিডব্লিউএফের পক্ষ থেকে থানা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।

এছাড়া ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের কথা বিবেচনা করে কোন রাজনৈতিক দল যেন বাজার কেন্দ্রীক কোন প্রকার মিছিল বা সভা-সমাবেশ এড়িয়ে চলেন সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

দাগনভূঞা থানার ওসি লুৎফুর রহমান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিন-রাত সর্বদা তৎপর রয়েছে। মার্কেটগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

চুরি, ছিনতাইসহ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকে পুলিশ নজরদারি করছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!