নেত্রকোনার সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান খান আবুনি ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম রেনু মাষ্টারের বিরুদ্ধে ভিজিএফের বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। তাদের কারসাজির কারণে ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ব্লকের ছয়টি ওয়ার্ডের মানুষ চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
রোববার চাল সংগ্রহ করতে এসে অনেক গ্রামবাসী খালি হাতে ফিরে গেছেন। এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মৌগাতি গ্রামের রাহেলা খাতুন (৭৫), শরীফ মিয়া (২৭), হাফিজ মিয়া (৩৫), জায়েদা (৪৫), জুয়েল (৩৫) ও মাসুদ মিয়া (৩৫), তেলিগাতী গ্রামের শাহানা খাতুন (৬৫), হলুদাটি গ্রামের কুসুমা (৬০), নাটোরকোনা গ্রামের আসাদ মিয়া (৫৩) ও সবদুল গণি (৫৭), বাদেসমুনদিয়া গ্রামের কাসেম (৬৫), চুচুয়া গ্রামের রতন মিয়া (৪৪)সহ আরও অনেকে।
তাদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতার যোগসাজশে ৩ নম্বর ব্লকের হলুদাটি, ফইচকা, গর্দি, চাউরকোনা, কাষ্ণনপুর, বড় গর্দি, ছোট গর্দি, জয়নগর, কুশলগাঁও, ফইচকা বড়বাড়ি গ্রামগুলোর ৯৯% মানুষকে চাল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১ ও ২ নম্বর ব্লকের পূর্বডহর, হাফানিয়া, জামাটি, তেলিগাতি, টিকুরিয়া, বরজামাটি, আসনউড়া, ফাদুলিয়া, পশ্চিম ফাদুলিয়া, মইজজাটি, সাতপাটি, মৌগাতি, নাটোরকোনা, বাদেসমুনদিয়া, চুচুয়া, নগুয়া, মারাদীঘি, পশ্চিম মারাদীঘি, কাটপুরা, বনগাঁও, যোগাটি, নোয়াপাড়া গ্রামগুলোর মাত্র ৮% মানুষ চাল পেয়েছে। ফলে শতকরা ৯২% মানুষ ভিজিএফের চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
স্থানীয়দের মতে, চেয়ারম্যান আবুনি আগামী ইউপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, আর ৩ নম্বর ব্লকের বিএনপি নেতা রেনু মাষ্টার নির্বাচন করতে পারেন। তাই রাজনৈতিক স্বার্থে চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতার মধ্যে সমঝোতা হয়েছে, যার ফলে চাল বিতরণে এমন বৈষম্য হয়েছে।
মৌগাতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম রেনু জানান, ‘আমাদের নেতাকর্মীরাই অধিকাংশ কার্ড বিতরণ করেছে। নিয়ম মেনেই চাল দেওয়া হয়েছে, তবে সেদিন ভিড় বেশি ছিল, তাই কিছু বিশৃঙ্খলা হয়েছিল।’
ইউপি সচিব লিংকন জানান, ‘সঠিক নিয়ম মেনেই কার্ড তৈরি করা হয়েছে এবং চাল বিতরণ করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি, তবে কিছু মানুষ ভুল অভিযোগ তুলছে।’
চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান খান আবুনির মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা বিনতে রফিক বলেন, ‘যাদের ভিজিএফ কার্ড আছে, তারাই চাল পাবেন। যদি কার্ড তৈরি করতে অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’