সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে রোগী বহনকারী গাড়িতে কান্নার শব্দ শুনে অপহরণকারী সন্দেহে গাড়ি আটকে দেয় গ্রামবাসী। পরে বিষয়টি বোঝার পর ছেড়ে দিলেও, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের পিঠাপশী ও ঘোড়াডুম্বুর গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের বাসিন্দা লেগুনা চালক ফখরুল ইসলামের ১৫ মাস বয়সি শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন শিশুর মা, দাদি ও এক ভাই। শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় গাড়ির ভেতর কান্নাকাটি করছিলেন তার মা ও দাদি।
এ সময় ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের কয়েকজন কান্নার আওয়াজ শুনে অপহরণ সন্দেহে সামনের গ্রামের লোকজনকে ফোন করে গাড়ি থামাতে বলেন। পরে পিঠাপশী গ্রামের এমরাজ মিয়া, ছালিক মিয়া ও শামীম মিয়াসহ কয়েকজন ফখরুলের দ্রুত গতির গাড়িকে থামতে বলেন। কিন্তু শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় দ্রুত লেগুনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ফখরুল।
গাড়ির ভিতরে শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় সঙ্গে থাকা নারীও সমানে কাঁদছিলেন। এতে লোকজনের সন্দেহ হলে সামনের গ্রাম খারাইয়ের মানুষের সহায়তায় খারাই পয়েন্টে লেগুনাকে আটকানো হয়।
এ নিয়ে ফখরুলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও তর্কাতর্কিতে জড়ান গাড়ি আটকানো লোকজন। তারা গাড়িচালক ফখরুলকে আটক রাখেন। পরে বিষয়টি বুঝতে পেয়ে তারা অসুস্থ শিশুসন্তানকে চিকিৎসার জন্য ছেড়ে দেন।
এ ঘটনার জেরে সোমবার দুপুরে পিঠাপশী গ্রামের হেলাল আহমদ (২০) ঘোড়াডুম্বার গ্রামে আসলে তাকে আটকে রাখে ওই গ্রামের লোকজন।
এ খবর পিঠাপশী গ্রামে এসে পৌঁছলে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পরে দুপুর ২টায় সংঘর্ষে জড়ায় উভয় গ্রামের লোকজন। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী বলেন, ‘খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ভুল বোঝাবুঝির কারণে দুই গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। এ ঘটনায় দুই পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
তবে এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। পরিস্থিতি শান্ত আছে।’