বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

পাপোশ বুনে স্বাবলম্বী আমির আলী

তাহেরুল ইসলাম তামিম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ০৪:০০ পিএম

পাপোশ বুনে স্বাবলম্বী আমির আলী

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দর্জি থেকে পাপোশ তৈরির কারখানার মালিক। পাশাপাশি কারখানায় কর্ম হয়েছে ৪২ শ্রমিকের। কঠোর পরিশ্রম ও ব্যবসায়িক সততা আমির আলী দর্জির কাছে এখন দৃষ্টান্ত।

ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাদিহাট গ্রামের বাসিন্দা আমির আলী। বাড়ির উঠোনে টিনশেড দিয়ে তৈরি করেছেন পাপোশ তৈরির কারখানা।  সেখানেই কাজ করেন ৪২ নারী-পুরুষ। শ্রমিকরা তাঁতের শব্দে দিনভর কঠোর পরিশ্রম করে বুনে যাচ্ছেন পাপোশ। বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হয় স্বল্প মূল্যের দৃষ্টিনন্দন এই পাপোশ।

পাপোশ তৈরির কারখানার উদ্যোক্তা আমির আলী জানান, এক সময় তিনি দর্জি কাজ করে সংসার চালাতেন। পাপোশের কারখানা প্রতিষ্ঠা করে এখন সাবলম্বী। 

২০০৫ সালে পাশেই একটি ছোট পাপোশের কারখানা দেখতে যান তিনি। সেখান থেকে আগ্রহ জাগে তাঁর।

দু-একজন শ্রমিক ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রথমে ১৪টি মেশিন স্থাপন করেন। দর্জি কাজের দক্ষতা ও সাময়িক প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন এ কাজ। এক মাসের উৎপাদিত পাপোশ ঢাকার নিউমার্কেটে পাইকারি আড়তে বিক্রি করেন। সেখান থেকে প্রচুর পাপোশের অর্ডার পান। কারখানার পরিধি বাড়িয়ে ৩০টি তাঁতের  মেশিন স্থাপন করেন।

এরপর তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দিন দিন অর্ডারের পরিমাণ বাড়তে থাকে। তাই একসময় শ্রমিক সংকটে পড়েন। তখন নিজ উদ্যোগেই শুরু করেন গ্রামের নারীদের ফ্রিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। কাজ রপ্ত করে নারীরা উপার্জনে সক্ষম হয়ে ওঠেন। অর্ডার অনুযায়ী সাপ্লাই দিয়ে তিনি এখন সাবলম্বী।

পাপোশ বুনার প্রধান কাঁচামাল পোশাক কারখানার কাপড়ের টুকরো বা ঝুট। আর নিম্নমানের সুতা। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ঝুট এবং বগুড়া থেকে সুতা সংগ্রহ করেন তিনি। পরে এগুলো প্রক্রিয়াজাত করে তাঁতের মেশিনে বানানো হয় ফ্লোর মেট, পাটের পাপোশ, সুতার পাপোশ, ডাইনিং পাপোশসহ বিভিন্ন রকমের নান্দনিক পাপোশ।

কারখানার শ্রমিকরা জানায়, তারা প্রতি সেট পাপোশ তৈরি করে ১৭০ টাকা করে পান। প্রতিদিন তিন-চারটি পাপোশ সেট তৈরি করতে পারেন। এতে তাদের ৫০০ থেকে প্রায় ৭০০ টাকা উপার্জন হয়। এতে তাদের সংসার ভালো চলছে ।

এসব পাপোশ ঢাকা, সিলেট, রংপুর, কুষ্টিয়া, রজশাহী, চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে পাইকারি মূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে।

আরবি/আবু

Link copied!