সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিগারেটের ধোঁয়া নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটেছে। কথা কাটাকাটি থেকে মাথা ফাটানো। এ ঘটনায় পুলিশ, ব্রাদার ও পথচারীসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩ জনকে। সোমবার (২৪ মার্চ) রাত ৯ টার দিকে হাসপাতালের জরুরিও ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ঘটে এই ঘটনা।
আহতরা হলেন- ওসমানীর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্রাদার জাহিদুল ইসলাম (২৮), শহীদুল ইসলাম (৩২), রাসেল আহমদ (২৭), দিলোয়ার হোসেন (২৪), পুলিশ সদস্য সুভাশীষ দাশ (৩২), জাবুর হোসেন (২৮), ফেরদৌস আহমদ (২৫), পথচারী জাকির হোসেন (২৬)।
এই ঘটনায় আটকরা হলেন- জকিগঞ্জ উপজেলার শাহজালালপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে নগরীর মীরবক্সটুলা ভাই ভাই রেস্টুরেন্টের কর্মচারী গিয়াস উদ্দিন রানা (৩৫), তার সহোদর মোস্তাক হোসেন (২২) ও একই রেস্টুরেন্টের কর্মচারী জকিগঞ্জের আব্দুল আহাদের ছেলে আব্দুর রহিম (২২)।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোমবার ইফতারের পর নগরীর মীরবক্সটুলায় একটি টং দোকানে বসে চা পান করছিলেন রাসেল আহমদ নামের এক যুবক। পাশেই সিগারেট খেয়ে ধোঁয়া ছাড়ছিল ভাই-ভাই রেস্টুরেন্টের একজন স্টাফ। সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে নিষেধ করা নিয়ে রাসেল ও তার সঙ্গী দুজনের সঙ্গে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়।
পরে সড়ক ভবনের ভেতর দিয়ে তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের লোকজন বসলে ফের শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে রেস্টুরেন্ট থেকে হাঁতুড়ি, রড নিয়ে ১০/১২ জন কিশোর এসে রাসেল-জাহিদুলদের ওপর হামলা চালায়।
এ সয়ম পথচারী জাকির হামলা শিকার হন। আহত অবস্থায় তারা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ইর্মাজেন্সি বিভাগে আসলে সেখানেও ২০-২০জনের একটু গ্রুপ এসে হামলা করা হয় তারা নার্সদের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে। আহতরা নার্স ও চিকিৎসকের সংরক্ষিত কেবিনে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা করে হামলাকারীরা।
তাৎক্ষণিক হাসপাতালের ক্যাম্প পুলিশও পরিস্থিতি নিরসনের চেষ্টা করলেও তাকে আঘাত করা হয়। পরে আরও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয় এবং অন্যরা পালিয়ে যায়।
আহত রাসেল আহমদ বলেন, ইফতার পরবর্তীতে টং দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় এক ছেলে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ে আমার দিকে। আমি তাকে সরে গিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে বললে সে নিজেকে স্থানীয় বাসিন্দা পরিচয় দেয় ও আমাদের ওপর দু’দফা হামলা চালায়।
আহত পথচারী জাকির হোসেন বলেন, উইমেন্স মেডিকেলে আমার আম্মা ভর্তি। পায়ে হেঁটে মেডিকেল যাওয়ার পথে হঠাৎ করে আমাকেও মারা হয়।
ওসমানী মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের আহত নায়েক সুভাশীষ দাশ বলেন, হাসপাতালে মারামারি দেখে আমি এগিয়ে এলে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পাবলিক ভেবে আমাকে মারধর করা হয়। আমি এখন আহত অবস্থায় ওসমানীতে ভর্তি আছি।
এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, সোমবার রাত আটটার দিকে চৌহাট্টার দিকে সংঘর্ষের পর আহতরা এসে ভর্তি হন ওসমানীতে। আগের সংঘর্ষের জেরে বহিরাগতরা এসে আহতদের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে এসে হামলা করে। এ সময় নার্স ও ব্রাদাররা প্রতিহত করতে গেলে তাদেরকে মারধর করা হয়৷
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. জিয়াউল হক বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ তাৎক্ষণিক ওসমানী মেডিকেলের জরুরি বিভাগে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। দু’দফা সংঘর্ষে অন্তত ৮জন আহত হয়েছেন। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।