শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫

রাঙ্গামাটিতে ‘পর্যটন স্থাপনা’ নির্মাণ নিষিদ্ধ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম

রাঙ্গামাটিতে ‘পর্যটন স্থাপনা’ নির্মাণ নিষিদ্ধ

ছবি: সংগৃহীত

পর্যটন নগরী সাজেকসহ রাঙ্গামাটি জেলায় অনুমোদন ছাড়া পর্যটন ও বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে পার্বত্য জেলা পরিষদ।

সোমবার (২৪ মার্চ) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম এক আদেশে এ  তথ্য জানান।

আদেশ অনুযায়ী, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ (এবং এর সংশোধনীগুলোর) ২২ ধারার অধীনে প্রথম তফসিলের ক্রমিক ২৮ অনুসারে, স্থানীয় পর্যটন বিষয়ক কাজ পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতায় রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় পর্যটন কার্যক্রম পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সাজেকসহ বিভিন্ন এলাকায় সঠিক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে বাণিজ্যিক ভবন বা পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ এবং এর সংশোধনী লঙ্ঘিত হচ্ছে, পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে, সাজেকসহ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সকল স্থানে জেলা পার্বত্য পরিষদের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাণিজ্যিক ভবন বা পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, নির্দেশনা কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ, দফতর এবং সংস্থাগুলোকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পর্যটন উদ্যোক্তা ললিত চন্দ্র চাকমা বলেন, "জেলা পরিষদের এই সিদ্ধান্ত আমরা স্বাগত জানাই। পার্বত্য চুক্তির আলোকে স্থানীয় পর্যটন তাদের হাতে ন্যস্ত। তবে বর্তমানে পর্যটনের নামে যত্রতত্র অপরিকল্পিত স্থাপনা গড়ে উঠছে। এতে পাহাড়ের প্রকৃতি এবং পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে। এসব নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি না হলে পর্যটকরা রাঙ্গামাটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। আমি চাই জেলা পরিষদ একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করুক।"

তিনি আরও বলেন, "জেলা পরিষদকে সজাগ থাকতে হবে, যাতে কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কিংবা রাজনীতির প্রভাব এখানে না পড়ুক। আমাদের একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত— তা হলো রাঙ্গামাটিতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ, এবং সেটি হতে হবে প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা করে।"

প্রসঙ্গত, রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ আগুনে ৯৮টি স্থাপনা পুড়ে যায়, যার মধ্যে রিসোর্ট, কটেজ, হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং স্থানীয়দের বসতবাড়ি ছিল। এরপর থেকেই রাঙ্গামাটিতে অপরিকল্পিত পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ এবং জেলা পরিষদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়। 

২০১৪ সালে পার্বত্য চুক্তির আওতায় সরকার স্থানীয় পর্যটন খাত জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করলেও, এবারই প্রথম পর্যটন বিষয়ক কোনো নির্দেশনা জারি করল রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ।

আরবি/শিতি

Link copied!