শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫

মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ, নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম

মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ, নিহত ১

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মিরসরাই উপজেলা ও দুই পৌরসভার কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে এবার তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১২ জন।

বুধবার (২৬ মর্চ) উপজেলার বারৈয়াহাট পৌরসভার শান্তিরহাট রাস্তার মাথায় এ সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত যুবকের নাম মো. জাবেদ হোসেন (৩৪)। তিনি নগরীর বায়েজিদ থানার নীলগিরি আবাসিক এলাকায় মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে। জাবেদ এক যুবদল কর্মীর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন বলে জানা গেছে।

আহতরা হলেন- ফজলুল করিম (৪৩), জাহেদুল ইসলাম (৪২), শহীদুল ইসলাম (৫১), ওমর ফারুক (৩৫), দিদার (৩৭), আবু সুফিয়ান (৪৫), ফাহিম (২১) এরশাদ (৪০), মোলাম মোর্শেদ (৪০), ইলিয়াছ ((৫০), দিদার (৪০), রাসেল (৫০)। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার মিরসরাই উপজেলা, বারৈয়াহাট ও মিরসরাই পৌরসভার তিনটি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে পদধারী ও পদবঞ্চিতদের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। মঙ্গলবার একটি পক্ষ মহাসড়ক অবরোধ করে।

এর মধ্যেই সকালে বারৈয়াহাট পৌর বিএনপির আহ্ববায়ক মাঈনুদ্দিন লিটনের বাড়িতে জড়ো হয় তার অনুসারীরা। পরে সেখানে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের অনুসারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে।

মিরসরাই উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সদস্যসচিব আজিজুর রজমান চৌধুরীর বড় ভাই ইলিয়াছ রহমান চৌধুরী অভিযোগ করেন, মিরসরাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক দেওয়া স্থগিত করার কারণে আমরা নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে বারৈয়াহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈনুদ্দীন লিটনের জামালপুরের বাড়িতে যাওয়ার পথে নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, গাজী নিজাম ও দিদারুল আলম মিয়াজীর অনুসারীরা আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাবেদ হোসেন নামে একজন মারা যায়।

বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাঈনুদ্দীন লিটন বলেন, নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের লোকজনের হামলায় আমার কর্মী মাসুদের বন্ধু জাবেদ হোসেন নিহত হয়েছে। জাবেদ হোসেন মাসুদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। এ ঘটনায় আমরা আইনি ব্যবস্থা নিবো।

এবিষয়ে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক নুরুল আমিন বলেন, উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী বারৈয়াহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাঈনুদ্দীন লিটনের বাড়িতে লোকজন জড়ো করছিলো। ওই বাড়িতে যাওয়ার সময় আজিজুর রহমানের লোকজন পথে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীকে মারধর করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বারৈয়াহাট পৌর বাজারে অবস্থান করা আমাদের লোকজন সেখানে গেলে দুই পক্ষে মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে দুই পক্ষে কয়েকজন আহত হয়। সেখানে যে যুবক নিহত হয়েছে সে কে ছিল বা তাকে কারা মেরেছে তা আমার জানা নেই।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, মিরসরাইয়ে বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে উত্তেজনা চলছিল। এর জেরে বুধবার বারৈয়াহাট পৌরসভার শান্তিরহাট সড়কের মুখে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক যুবক নিহত হয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি।

উল্লেখ্য, উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি ও পদবঞ্চিতদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে সংঘর্ষের আশঙ্কায় বুধবার ভোর ৬ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টা উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার ৫০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
 

আরবি/একে

Link copied!