মানিকগঞ্জের শিবালয় আরিচা ঘাটে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রায় ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মহাবারুণীর স্নান। এতে অংশ নিতে পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে যমুনার পাড়ে। পাপমুক্তির আশায় নদীতে স্নান করতে আসেন পুণ্যার্থীরা। ঐতিহ্যবাহী বারুণীর স্নান ঘিরে নদীর পাড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা।
বারুণীর স্নানে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল থেকেই মানিকগঞ্জ জেলাসহ আশপাশের এলাকা থেকে জড়ো হন হাজারো পুণ্যার্থী। সকাল ৭টা থেকে যমুনা নদীতে এ স্নান কাযর্ক্রম শুরু হয়।
পূজা-অর্চনাসহ নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে স্নানে অংশ নেন সববয়সি মানুষ। তারা পাপ মোচনসহ পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো থাকতে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন। এ উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নদী পাড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী হাজার হাজার নারী-পুরুষ পরিবার পরিজন নিয়ে স্নান করতে এসেছেন। তারা পুরোহিতদের মাধ্যমে নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্নান করছেন। পুণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে আরিচা ঘাট।
এদিকেই স্নানকে কেন্দ্র করে নদী পাড়েই হরেক রকম পণ্য সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিয়োজিত রয়েছেন।
প্রিয়াংকা দাস, রতন বিশ্বাস, কমল দাসসহ কয়েকজন পুণ্যার্থী রূপালী বাংলাদেশকে জানান, এই দিনের জন্য তারা সারা বছর অপেক্ষা করেন। পাপ মোচনের আশায় তারা পরিবারের সবাই মিলে স্নান করে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন সবাই যেন ভালো থাকে।
কয়েকজন পুরোহিত জানান, স্নানের আগে মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে ভক্তদের শুদ্ধ করানো হয়। এরপর তারা নদীর জলে ডাব, ধান, কলা, আমের কুড়ি, দূর্বা ভাসিয়ে দিয়ে স্নান করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ স্নানে তাদের বিগত দিনের পাপ মোচন হয়।
শিবালয় বন্দর ব্যবসায়ী সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন জানান, আরিচা ঘাটে বারুণী স্নান ও মেলা প্রায় ৩০০ বছরের ঐতিহ্য। স্নান একদিন হলেও, মেলা চলে এক সপ্তাহ।
মেলায় নাগরদোলা, রেল গাড়ি, যাদু প্রদর্শনী, খেলনা, প্রসাধনী, সাজসজ্জাসহ নানা কাঠ বেত, মাটি ও লোহার তৈরি আসবাবপত্র গৃহকাজে ব্যবহার্য সমাগ্রীর দোকান বসেছে।
এ ছাড়া সাজ, বিন্নি, খৈ, বাতাসা এবং বিভিন্ন মসলার দোকান। মেলার ঐতিহ্যবাহী খাবার।