রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রামে রবির অর্ধশত টাওয়ার অচল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম

পার্বত্য চট্টগ্রামে রবির অর্ধশত টাওয়ার অচল

ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ফলে মোবাইল অপারেটর রবির নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। গত তিন মাসে একাধিক স্থানে দুর্বৃত্তরা রবির মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে এবং ফাইবার অপটিক কেটে ফেলেছে, যার ফলে প্রায় অর্ধশত টাওয়ার বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া, অপরাধী চক্র কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীকে অপহরণ করেছে বলে দাবি করেছে অপারেটরটি।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রবি’র পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে টাওয়ার কোম্পানি ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড টাওয়ারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কাজ করলেও এখনো পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি, যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রবি কর্তৃপক্ষ। মোবাইল ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পাশাপাশি, পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্য মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে, যার ফলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পার্বত্য তিন জেলা। খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, লক্ষীছড়ি, পানিছড়ি, দিঘীনালা, মানিকছড়ি, নানিয়ারচর, রাউজান, ফটিকছড়ি, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় দুর্বৃত্তরা ৫১টি মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে এবং ফাইবার কেটে ফেলেছে। রবি দাবি করেছে, চলমান এই নাশকতামূলক কার্যক্রমের পেছনে চাঁদাবাজি অন্যতম কারণ।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুযায়ী, শুধুমাত্র খাগড়াছড়িতেই ৩২টি টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে সাতটি সচল করা সম্ভব হলেও এখনো ২৫টি বন্ধ রয়েছে। এসবের মধ্যে কিছু টাওয়ার মাঝে মাঝে সচল হলেও আবার দ্রুত অকার্যকর হয়ে পড়ছে। এছাড়া, পার্বত্য তিন জেলার অন্তত ২৬টি টাওয়ারের ফাইবার সংযোগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা কেটে ফেলা হয়েছে। অনেক জায়গায় সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হলেও তা আবার নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থান থেকে তিনজন নিরাপত্তাকর্মী অপহৃত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি, অপরিচিত নম্বর থেকে রবির কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্ট এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এর ফলে টাওয়ার পুনরুদ্ধার কাজেও কোনো অগ্রগতি নেই। ইডটকো নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে, যা রবির রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ইডটকোর নিরাপত্তা দল এবং স্থানীয় প্রশাসন এই সমস্যার সমাধানে কাজ করছে। তবে দ্রুত মোবাইল টাওয়ারগুলো সচল করা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরি। রবি জানিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তার স্বার্থে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রবি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে, পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা ও ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বিপর্যস্ত হবে।

আরবি/একে

Link copied!