ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫

ঈদে রাঙামাটির হোটেল-মোটেলে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়

এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি
প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৫, ০৫:২১ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র রাঙামাটি। ঈদের টানা ৯দিনের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটির হোটেল-মোটেলগুলো। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের জন্য থাকছে বিশেষ ছাড়।

প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি, কাপ্তাই হ্রদ এবং মেঘ-পাহাড়ের আকর্ষণে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় জমাচ্ছেন তিন পার্বত্য জেলায়।

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় কয়েক লাখ পর্যটকের আগমন ঘটবে। আবাসিক হোটেল মালিক, রিসোর্ট কটেজ মালিক সমিতির লোকজন জানিয়েছেন, ঈদের ছুটিতে ৬০শতাংশ অগ্রিম বুকি হয়েছে। দেশের প্রেক্ষাপট যদি ভাল থাকে তাহলে পর্যটন খাতে ভালো ব্যবসা হবে।

তবে গত ২৪ফেব্রুয়ারি সাজেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৭০-৮০টি রিসোর্ট কটেজ আগুনে পুড়ে যাওয়ায় এবার রাঙামাটিতে পর্যটকদের চাপ বাড়তে পারে এমন ধারনা ব্যবসায়িদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙামাটি।

মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য, সাজেকের মেঘ পাহাড়,কাপ্তাই হ্রদ,ঝুলন্ত সেতু,মেঘ-পাহাড়ের লুকোচুরি এবং ক্ষুন্দ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ণিল সংস্কৃতির কারণে রাঙামাটি এবং এর আশেপাশের অঞ্চলগুলো সারা বছর ধরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরত থাকে।

তবে মৌসুমি ঋতু পরিবর্তন ও চৈত্র ও ফাগুনের তিব্রতা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে শুরু করছে পর্যটকদের আনা-ঘোনা।

পাহাড়ের সবুজাভ আচ্ছাদন, কাপ্তাই হ্রদের শান্ত জলরাশি এবং সাজেকের মেঘে ঘেরা পাহাড়ি পথের মনোরম দৃশ্য দেখতে এই ঈদে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসছেন পর্যটকরা।

ঈদ আসার সাথে সাথে ধীরে ধীরে পর্যটকদের উপস্থিতি আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলে প্রত্যাশা ব্যবসায়িদের।

রাঙামাটির অধিকাংশ হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ এরইমধ্যেই ৬০-৭০ ভাগ বুকিং হয়ে গেছে। রাঙামাটির প্রধান পর্যটন স্পটগুলোতে বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থীর আগমণ লক্ষ্য করা গেছে। ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝরণা,কাপ্তাই লেক,নেভি ক্যাম্প, রাজবাড়ি এবং সাজেকের মেঘে ঘেরা পাহাড়ি পথের দৃশ্য উপভোগে সবাই ছুটে আসবে এই ঈদে।

আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন,ঈদকে সামনে ঘিরে প্রচুর পরিমান এবার পর্যটকের আগমন ঘটবে।

পাহাড়ে ঈদ মানি পর্যটকদের কাছে অন্য রকমের আনন্দ। তাই পর্যটক বরণে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। পর্যটকরা যেন র্নিভয়ে এসে এখানে বেড়াতে পারে সে জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

যেহেতু এবার সাজেকে অগ্নিকান্ড ঘটনায় অনেক কটেজ রিসোর্ট পুড়ে গেছে তাই রাঙামাটিতে পর্যটকের চাপ বাড়তে পারে।

আবাসিক হোটেল এম্ভেসাডার রিশিপশনার মামুন বলেন, এবার ঈদুল ফিতরে টানা ৯দিন ছুটিতে পর্যটক বরণে আমরা প্রস্তুত আছি। তাই আশা করছি এবার প্রচুর পর্যটক আসবে এখানে। আমাদের হোটেলের সব রুম এবং খাবার রেস্তোরাসহ সব ধরনের প্রস্ততি ইতি মধ্যে আমরা সম্পন্ন করেছি। আশা করছি আশানুরুপ পর্যটক রাঙামাটি বেড়াতে আসবে। এবার আমাদের হোটেলে পর্যটকদের জন্য ৪০% ছাড় রয়েছে।

আবাসিক হোটেল সোনার বাংলার ম্যানেজার তারেক বলেন, আমরা আশা রাখছি এই ৯দিন বন্ধে পর্যটক আসবে এবং আমাদের ভাল ব্যবসা হবে। ঈদে আগত পর্যটকদের জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি শেষ। প্রায় ৫০% রুম বুকিং হয়ে গেছে।

পর্যটকদের জন্য ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভাল থাকলে আশা করছি পর্যটক আসবে আর পর্যটক আসলে আমাদের ব্যবসা ভাল হবে।

পর্যটন নৌযান ঘাটের টোল আদায়কারী মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন,ঈদকে সামনে রেখে আমাদের পর্যটক ঘাটে প্রায় ১শ’ পর্যটক বোট সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

তাই পর্যটক সেবায় আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে। আমরা আশা করছি এই ৯দিনের বন্ধে প্রচুর পর্যটক আসবে। এতে করে আমাদের বোট মালিক ও বোট শ্রমিকেরা লাভবান হবে।

রাঙামাটি পর্যটক হলি ডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক- আলোক বিকাশ চাকমা বলেন,সামনে যে সরকারী ৯দিন বন্ধ রয়েছে।এই বন্ধে পর্যটক বরণে আমরা সবকিছু রবরব সাজে সাজিয়েছি।পর্যটকদের জন্য আমাদের সবকিছু সাজাইতেছি।

এবার বন্ধে আমরা প্রায় ৬০% অগ্রিম বুকিং পেয়েছি। আমাদের প্রস্ততি সন্তোষজনক। আমরা প্রত্যাশা করছি প্রচুর পর্যটক আসবে এখানে।

রাঙামাটি জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(পদোন্নতি প্রাপ্ত এসপি)মারুফ আহম্মদ বলেন,রাঙামাটি বাংলাদেশের একটি অন্যতম বড় পর্যটক কেন্দ্র। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রচুর আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দিন রাত ডিউটি করবে। শহরের প্রবেশ পথে প্রচুর নিরাপত্তারবাহিনী রয়েছে।

এছাড়াও শহরের মধ্যে অলিতেগলিতে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশি টহল থাকবে।

এছাড়াও নিরাপত্তার কাজে সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থা দায়িত্ব পালন করবে। পর্যটকদের ঘুরাফেরায় যেন কোন বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কাজ করবো।