ভারতে অনেক টাকা বেতনের ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ময়মনসিংহ থেকে এক তরুণীকে সাতক্ষীরায় এনে গণধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
কালীগঞ্জ থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, গত রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত জেলার কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মেহেদি হাসান ওরফে সবুজ (২৪), সাকিব হোসেন (২০) ও মো. গোলাম রসুল ওরফে রাকিব (২১)।
সাতক্ষীরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী সম্পর্কে ওই হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সোমা রানী দাস বলেন, “ভুক্তভোগী তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।”
সাতক্ষীরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী তরুণী জানান, তার বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায়। পেশায় তিনি একজন মডেল ও পারলারের রূপবিশেষজ্ঞ। কয়েক দিন আগে ফেসবুকে তার সঙ্গে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কাঠুনিয়া গ্রামের গোলাম রসুলের পরিচয় হয়।
কয়েক মাস কোনো কাজ না থাকায় তিনি বাড়িতে বেকার বসে ছিলেন। গোলাম রসুলের সঙ্গে পরিচয়ের একপর্যায়ে তিনি ভারতে কাজের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান। পরে তার কথায় ২২ মার্চ তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে আসেন। ওই দিন সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে মেহেদি হাসান ও গোলাম রসুল তাকে নিয়ে মেহেদির বাড়িতে নিয়ে রাখেন।
ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, রোববার গ্রেপ্তার মেহেদির বাড়ি থেকে তাকে কদমতলা গ্রামের আমিনুল ইসলাম নামের একজনের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অচেতন করার পর একে একে কয়েকজন তাকে ধর্ষণ করেন।
পরদিন সোমবার তাকে শ্যামনগর উপজেলার কুলতলী গ্রামে একজনের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। মঙ্গলবার আবার তাকে কয়েকজন ধর্ষণ করেন। এরপর ফের তাকে মেহেদির বাড়িতে আনা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে ৯৯৯ নম্বর কল করলে দুপুরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল রশিদ মোল্যা বলেন, “এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার বিকেলে থানায় মামলা করেছেন। এর মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। ওই তরুণী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।”
কালীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার (এসআই) তাপস ঘোষাল জানান, এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ। দ্রুতই সব অপরাধীরা আইনের আওতায় আসবে।