ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫

পর্যটক বরণে প্রস্তুত ‘প্রকৃতিকন্যা’ গোয়াইনঘাট

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র ঈদুল ফিতরে ছুটিতে গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন পর্যটন স্থানে ঘুরতে আসেন অনেকেই। প্রতি বছরই ঈদ মৌসুমে প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ে পাহাড়-পাথর, ঝর্ণা, স্বচ্ছ পানি আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় করেন ভ্রমণ পিয়াসী মানুষ। আর এ বছর ভারতীয় ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ এবং লম্বা ছুটি হওয়ায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতিও নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

প্রকৃতির রূপ লাবণ্যে ঘেরা প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ের জিরোপয়েন্ট, মায়াবীঝর্ণা, চা বাগান,খাসিয়াপুঞ্জী,সাদা পাথরসহ পর্যটন স্থানগুলোতে প্রতিদিনই লাখো পর্যটককে ভরপুর থাকে। এর পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে তৈরি করা হয়েছে বেশ কিছু ভিউ পয়েন্ট।

প্রকৃতি এখানে প্রতিনিয়ত যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে পর্যটকদের। অপার সৌন্দর্য এক নজর অবলোকন করার জন্য ঈদ পরবর্তী সময়ে পর্যটকরা ছুটে আসেন গোয়াইনঘাট  উপজেলার পর্যটন সস্পট প্রকৃতিকন্যা  জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি, পান্তুমাইল, মায়াবী ঝর্ণা। যেখানে পর্যটকরা মুগ্ধ হন, প্রেমে পড়েন শীতল প্রকৃতির এই লীলাভূমির।

তাই ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের বরণ করতে আবাসিক হোটেল-মোটেল, রেস্ট হাউজ, রেস্তোরাঁগুলোতে নেওয়া হচ্ছে আগাম প্রস্তুতি। পর্যটকদের নজর কাড়তে বিভিন্ন কসমেটিক্স ও বাহারী রকমের দোকানিরাও সাজিয়েছেন ভিন্ন আঙ্গিকে।

বৃহত্তর জাফলং পর্যটন কেন্দ্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ জানান, ঈদের লম্বা ছুটিতে এ বছর পর্যটককে ভরপুর থাকবে। আশা করা যাচ্ছে এ বছর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবেন। সে আলোকে দোকানিরা নতুন নতুন পণ্য ও কসমেটিক্সে দোকানপাট সাজিয়েছেন।

হোটেল দ্য ভিউ রেস্টুরেন্টের পরিচালক মো. আমির হোসেন জানান, আশা করা যাচ্ছে এবারের ঈদে প্রচুর পর্যটক জাফলং বেড়াতে আসবেন। তাদের রুচি সম্মত খাবার ও সেবা দিতে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। 

জাফলং পর্যটন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলু বখত জানান, এবার ঈদের লম্বা ছুটি। প্রতি বছর ঈদুল ফিতরে ঢল নামে পর্যটক-দর্শনার্থীদের। এবারও লম্বা ছুটি হওয়ায় আশা করছি পর্যটকের ভরপুর থাকবে জাফলংয়ে। সে লক্ষ্যে আমাদের কাস্টমারদের কথা বিবেচনা করে আমরা বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছি। পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

এ বিষয়ে জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে প্রচুর পরিমাণ পর্যটক প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ে বেড়াতে আসবেন। প্রতিদিন পর্যটকদের সংখ্যা কয়েক লাখ থাকতে পারে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় পোশাকধারী ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য ছাড়াও সাদাপোশাকে তৎপরতা থাকবে। পাশাপাশি থানা পুলিশ সদস্যরাও পর্যটনকেন্দ্রে নিরাপত্তার বিষয়ে সহযোগিতা করবেন। কোনো পর্যটক যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয় নিশ্চিত করা হবে। কেউ হয়রানির শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ঈদের ছুটিতে উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রচুর পর্যটকদের সমাগম ঘটে। এখানেই বেশির ভাগ পর্যটনকেন্দ্র। এর মধ্যে জাফলং, মায়াবী ঝরনা, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাই। তাই যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারের ঈদেও পর্যটকদের নিরাপত্তায় থানা পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার ও রোভার স্কাউটের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন বলে জানান তিনি।