ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫

‘ছিট কাপড়’ বিক্রিতে চলে রাবেয়ার সংসার

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে গ্রামে সাইকেল চড়িয়ে বেড়িয়ে ‘ছিট কাপড়’ বিক্রি করে সংসার চালান রাবেয়া।

৪৫ বছর বয়সী এই নারী সাইকেলে ছিট কাপড়, মশারি, বাচ্চাদের জামা-প্যান্ট নিয়ে  হাঁকডাক ছেড়ে বলছেন, ‘ছিট কাপড় লাগবে, ছিট কাপড়?’ আর এভাবেই ছিট কাপড় বিক্রি করে চলে তার সংসার।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে নরাইলের আগদিয়া, মধুরগাতি এলাকার উত্তর পাড়ায় এমন চিত্র দেখা যায়। ছিট কাপড় বিক্রেতা ওই নারীর নাম রাবেয়া খাতুন। স্বামী ও ২ সন্তান নিয়ে ৪ সদস্যের এ পরিবার তার। পরিবারসহ সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের গোবরা এলাকায় মিলনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন তিনি।

তিনি জানান, গরিব ঘরে জন্মা তাই খুব পড়াশোনা করতে পারিনি। অভাবের সংসার দেখে বাবা আমাকে ১৪ বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেয়। দিনমজুর স্বামীর সংসারে এসেও অভাব পিছু ছাড়েনি। দিনমজুরের কাজ করে স্বামীর যা রোজগার হয়, তা দিয়ে টেনেটুনে চলছিল সংসার।

এরই মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। স্বামী যা আয় করেন তা দিয়ে সংসার চালানো দায়। ছোট সন্তানদের নিয়ে এক অবর্ণনীয় কষ্টে চলতে হয় তাদের। খেয়ে না খেয়ে দিন চলতে থাকে। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কিছু দিন পার করেছি। এরই মধ্যে তার মাথায় এল বাজার থেকে ছিট-কাপড় কিনে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করবেন। প্রায় ৮ বছর আগে শুরু করেন ফেরি করে ছিট কাপড় বিক্রি। তার স্বামী মনি শেখ এক জন চিত্রশিল্পী। ছবি এঁকে তা বিক্রি করাই তার কাজ। তা থেকে সামান্য আয়। ১২ বছরের ছেলে সন্তান স্থানীয় মাদরাসায় হেফজো পড়ে। আট বছরের মেয়ে গোবরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী।

রাবেয়া খাতুন বলেন, ভোরে জেলা সদরের সিঙ্গাশোলপুর, গোবরা, মধুগাতি, বিছালী, আগদিয়া, কলোড়া এলাকায় ফেরি করে ছিট কাপড় বিক্রি করি। জেলা শহর থেকে পাইকারি দরে এসব সামগ্রী কিনে আনি। পরে সাইকেলে করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ছিট কাঁপড় বিক্রি করে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরি। এতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। এই আয়েই নিজের খরচের জোগান হয়।"

গোবরা এলাকার পিষুস কান্তি বিশ্বাস বলেন, রাবেয়া দীর্ঘদিন ধরে ছিট কাপড় বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। অনেক কষ্টে তার সংসার চলে দেখে খুব খারাপ লাগে। কিন্তু করার কিছু নেই।