মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আমতৈল ইউনিয়নের সনকাঁপন গ্রামের আরশ আলী ছেলে জুলাই ও আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে জেলার একমাত্র শহীদ শাহজাহান মিয়া। তার পরিবারের সদস্যদের মাঝে ঈদের আনন্দ নেই। অশ্রু সিক্ত মা-বাবার চোখ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সনকাঁপন গ্রামের আরশ আলীর ছেলে শাহজাহান। ছেলের কথা মনে করে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মা-বাবা। ঈদের আনন্দ যেন বিষাদের ছায়া হয়ে নেমেছে পরিবারটিতে। শাহজাহান ছাড়া ঈদের আনন্দ যেন শূন্য হয়ে গেছে তাদের জীবনে। ছেলে হত্যার বিচার দেখতে চায় শাহজাহানের পরিবার।
আরশ আলী মিয়ার বড় ছেলে ছিলেন শাহজাহান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের খবরে বের হওয়া বিজয় মিছিলে সবার সঙ্গে যোগ দেন শাহজাহানও। সিলেট দক্ষিণ সুরমা থানার ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকলে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে শাহজাহানসহ আরও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশের গুলিতে নিহত হন শাহজাহান।
সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি শাহজাহান মারা যাওয়ার ৭ দিন পর কন্যা জন্ম দেন তার স্ত্রী। ওই সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারেননি শাহজাহান, সন্তানও কোনোদিন দেখবে না বাবার মুখ।
নিহত শাহজাহানের বাবা আরশ আলী মিয়া বলেন, গত ঈদেও পরিবারের ছিল পরিপূর্ণ আনন্দ। কিন্তু এ বছর ছেলে আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ঈদের আনন্দও হারিয়ে গেছে। এবার ঈদে আমার শাজাহান বেঁচে নেই আমরা কিভাবে ঈদ করব। আমার ছেলে সিলেটে থেকে সিএনজি চালাত, মাঝেমধ্যে বাড়িতে এসে খরচ দিয়ে যেত। ৫ আগস্টের সরকার পতনের পর সিলেটে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আমার ছেলে নিহত হয়।
তার লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। আমরা ভিডিওতে তাকে দেখেছি বলেও জানান শাহজানের বাবা।
সনকাঁপন গ্রামের জাহানারা বেগম জানান, সিলেটে সিএনজি চালিয়ে কোনো রকম সংসার চালাত শাহজাহান। প্রতি ঈদে তার মা ও বাবার জন্য কাপড় কিনে আনতো। সেতো এই পৃথিবীতে বেঁচে নেই, সে কিভাবে আনবে। কষ্ট হবে না তাদের ছেলে নেই, কিভাবে ঈদের আনন্দ করবে। পরিবারটা কষ্টে রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুর রহমান বলেন, শাহজাহান মিয়ার আয়ের ওপর পরিবার নির্ভর ছিল। বর্তমানে তার পরিবার খুবই অসহায়। তাদেরকে সহায়তা করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।
আপনার মতামত লিখুন :