বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫

শিশু আছিয়া আর কোনোদিন হাতে মেহেদি দেবে না, মায়ের বিলাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৫, ০৯:১২ পিএম

শিশু আছিয়া আর কোনোদিন হাতে মেহেদি দেবে না, মায়ের বিলাপ

ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার বলেন, আমার আছিয়া কদিন আগেও ঘরে-আঙিনায় ছুটোছুটি করত, আপন মনে খেলত। এবার ঈদে কত আনন্দ করত। ঈদের সকালে ওর জন্য খিচুড়ি, নুডলস রান্না করে দিতাম। আর কোনো দিন খাবে না এসব খাবার। ঈদের আনন্দে হাতে মেহেদি দেবে না। যার যায় সেই বোঝে, সন্তান হারানোর কী যন্ত্রণা। আমাদের আবার কিসের ঈদ?’

সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন দুপুরে নিজ বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলেন আছিয়ার মা।

নিজ বাড়ির বারান্দায় একাকী বসে নিদারুণ কষ্টের প্রহর গুনছেন তিনি। আশপাশের সব বাড়িতে যখন ঈদের আনন্দ, তখন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে চলছে মাতম। পুরনো স্মৃতি মনে করে শুধু কাঁদছেন তিনি।

প্রতিবেশী মোবারক খান জানান, আছিয়ার পরিবার অত্যন্ত গরিব। তার বাবা ফেরদৌস শেখ ভ্যান চালিয়ে সংসারের চাহিদা মেটাতেন। তবে মেয়ের মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন। আছিয়ার মৃত্যুর পর কিছু সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা এলেও তা দিয়ে কোনো রকমে দিন চলছে। তবে ভবিষ্যতে কীভাবে চলবে গোটা সংসার, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবারটি।

বড় বোন হামিদা বলেন, ‘ঈদের আগের রাতে আছিয়ার হাতে মেহেদি দিতাম। ঈদের দিন আমরা দুই বোন একসঙ্গে ঘুরতে যেতাম, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। সেই আছিয়া এখন নেই। আমার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েই তার এমন অবস্থা হলো। আমরা ওই শয়তানদের ফাঁসি চাই।’

উল্লেখ্য, বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় ৫ মার্চ রাতে ৮ বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণের শিকার হয়। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং পরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় হিটু শেখকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শিশুটির মা আয়েশা আক্তার। মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখ ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে মামলার আসামিরা মাগুরা জেলা কারাগারে রয়েছেন।

আরবি/একে

Link copied!