ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল, ২০২৫

৩৪ জনের জীবন রক্ষা করা গাছের মৃত্যুদণ্ড!

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৫, ১১:০২ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বান্দরবানের লামায় জীবন রক্ষাকারী একটি রেইনট্রি গাছকে কাটার কারনে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে এলাকা জুড়ে। ৩৪টি মানব জীবন বাঁচানোর প্রতিদান দিতেই কি গাছটিকে কেটে হত্যা করা হল? দেওয়া হলো মৃত্যুদণ্ড! এমন প্রশ্ন উকি দিচ্ছে স্থানীয়দের মনে!

স্থানীয়রা জানান, গত ৩ এপ্রিল সকাল দশটায় পর্যটকবাহী একটি ঈগল পরিবহন ব্রেকফেইল করে গাছে ধাক্কা দিয়ে অন্তত হাজার ফুট গভীর পাহাড়ি খাদে পড়া থেকে রক্ষা পায়। সে সময় গাড়িতে থাকা যাত্রী ও চালকসহ ৩৪ জনের মধ্যে ২৫ জন আহত হলেও সে যাত্রায় গাছটির কারনে প্রাণে বেঁচে যায় সবাই।

যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে রাস্তার দুই পাশে বৃক্ষরোপন করে সজ্জিত করা হয় সেখানে ৩৪ জনের জীবন বাঁচানোর ২ দিন পরই শনিবার (৫ এপ্রিল) সেই রেইনট্রি গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। দূর্ঘটনা কবলিত গাড়িটি এখনো গাছটির নিচের অংশে গেলে আছে।

কিন্তু গাছটির নিচ থেকে ৬-৭ ফিট পর্যন্ত রেখে উপরের অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। বাকি অংশও কেটে ফেলা হবে যেকোন মূহুর্তে। এরুপ আচরণের বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে।

অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মধ্যমে লিখেছেন, মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রতিদান দিতেই কি গাছটি কেটে ফেলা হল? কেউ কেউ লিখেছেন, কি আপরাধ ছিল গাছটির? এছাড়া সড়ক ও জনপদ, বন বিভাগের পূর্বানুমতি ছাড়া কিভাবে গাছটি কাটা হল তা নিয়েও বিষ্ময় প্রকাশ করেন অনেকেই।

দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িটির আহত যাত্রী ডাক্তার ফাহাদ বিন তৈয়ব বলেছিলেন, ঈদ পরবর্তী পারিবারিক ভ্রমণে তারা লোহাগাড়ার আধুনগর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি মিনিবাসে করে লামায় আসছিলেন। যাত্রাপথে লামার মিরিঞ্জা এলাকায় মাদানীনগরে বাসটির ব্রেক কাজ করছিল না।

নিরুপায় দেখে চালক বাসটি গাছের সাথে ধাক্কা দেয়। সে সময় বাসে থাকা ৩৪ জনের মধ্যে নারী-শিশুসহ মোট ২৫ জন আহত হলেও গাছটির কারণে পাহাড়ের খাদে পড়া থেকে সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যায় সকলেই।

বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গাছটি কাটার বিষয়ে তার কাছে কোন প্রকার তথ্য নেই। যে বা যারা এই গাছটি কেটেছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।