বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনজন নার্সের বিরুদ্ধে প্রসবের সময় নবজাতকের হাত ভাঙ্গার অভিযোগ এসেছে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে মো. আতাউর রহমান শেখ নামের এক ব্যাক্তি এ লিখিত অভিযোগ করেন।
বুধবার (০৯ এপ্রিল) ইমাম মো. আতাউর রহমান শেখ সাংবাদিকদের বলেন, নার্স পূরবী, সাথী ও অনন্যার ভুল চিকিৎসা ও অদক্ষতার কারণে আমার শিশু কণ্যাটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে।
আতাউর রহমান শেখ উপজেলার চরকচুড়িয়া গ্রামের আব্দুর সালাম শেখের ছেলে ও পার্শ্ববর্তী নাজিরপুর উপজেলার বাঘাজোড়া গ্রামের ডাকুয়াবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম।
তিনি বলেন, আমি মসজিদে মাত্র ৮ হাজার টাকা বেতনে ইমামতি করি। এই সামান্য আয়ের টাকা দিয়ে সংসারই চলে না। মেয়ের চিকিৎসার জন্য আরও অনেক টাকার প্রয়োজন। এই অদক্ষ নার্স পূরবী, সাথী ও অনন্যার বিচার এবং নবজাতক কণ্যার চিকিৎসার আর্থিক সহযোগিতার চাই।
গত ৪ মার্চ সকালে আতাউর রহমান তার প্রসূতি স্ত্রীকে (২৭) সন্তান প্রসবের জন্য চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন বিকেল ৫ টা ৫০ মিনিটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স পূরবী রানী মৃধা, সাথী ও অনন্যা তার স্ত্রী’র সন্তান প্রসব করান।
কিন্তু নার্স পূরবী রানী মৃধা, সাথী ও অনন্যা হীরার অদক্ষতার কারনে তারা আতাউর রহমানের নবজাতকের বাম হাতটি ভেঙ্গে ফেলেন। এতবড় দূর্ঘটনার ঘটানোর পরও নার্সরা তাকে কিছু না জানিয়েই নবজাতক শিশুকে পরদিন বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠান।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে গেলে কর্তৃপক্ষ রাত সাড়ে ১২ টায় আতাউর রহমানের শিশু কন্যাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। এক্সেরের পর দেখা যায় নবজাতকের বাম হাতের হাড় ভাঙ্গা। সেখানে ৮ দিন আইসিইউতে নবজাতককে চিকিৎসার পর ১৩ মার্চ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিছুদিন আবারো অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স অনন্যা হীরা বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। কিছু জানতে হলে স্যারদের সাথে কথা বলেন।
সিনিয়র স্টাফ নার্স পূরবী রানী মৃধা বলেন, ওই বাচ্চাটি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় ছিল। আমরা সেফলি বাচ্চাটিকে প্রসব করেছিলাম। আমাদের দ্বারা বাচ্চাটির হাত ভাঙার কোন ঘটনা ঘটেনি। শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছিল।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায় বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনজন নার্সের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর বোঝা যাবে ঘটনাটি কি ঘটেছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. আ. স. মো. মাহবুবুল আলম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমি জানি। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি করে দিচ্ছি। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করব।
আপনার মতামত লিখুন :