বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পটুয়াখালীর বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের পালপাড়ায় মৃৎশিল্পের কার্যক্রম। বৈশাখী মেলার জন্য চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।
মাটির তৈরি পণ্যের কদর এখন শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রায় অর্ধশত বছর ধরে পালপাড়া মৃৎশিল্পের জন্য পরিচিত। এখানকার মাটির তৈরি খেলনা ও শৌখিন সামগ্রী বর্ষবরণ উপলক্ষে আয়োজিত বৈশাখী মেলাগুলোর অন্যতম আকর্ষণ। বর্তমানে পালপাড়ার তৈরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বড় বড় শোরুমে, এমনকি ‘আড়ং’-এর মতো প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
পালপাড়ার মৃৎশিল্পের অন্যতম রূপকার ছিলেন রাজেশ্বর পাল। এক সময় তিনি নিজেই বিভিন্ন মেলায় ঘুরে ঘুরে মাটির খেলনা ও সামগ্রী বিক্রি করতেন। তার অনুপস্থিতিতে এখন তার প্রতিষ্ঠানের পণ্য ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশের বাজারে।
স্থানীয় কারিগর নারায়ণ চন্দ্র দাস জানান, বর্ষবরণকে সামনে রেখে আমরা পান্তার থালা, বাসন, মগ, মিষ্টির পাতিলসহ নানা ধরনের শৌখিন পণ্য তৈরি করছি। এক সময় শুধু খেলনা বানাইতাম, এখন আধুনিক নকশায় ফুলদানি, কাপ-পিরিচ, ডিনার সেট, শোপিস সবই তৈরি করছি।
ঢাকা থেকে আগত এক ক্রেতা মাজারুল ইসলাম রুপম বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি এখানেই। ঢাকায় ফেরার পথে এখান থেকে কিছু মাটির জিনিস কিনে নিচ্ছি। এখন অনেকেই মাটির পণ্য ব্যবহার করে, তাই আমিও বাসায় নিয়ে যাচ্ছি।
পালপাড়া মৃৎশিল্প সমবায়ের সভাপতি বিশ্বেশ্বর পাল বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ক্রেতা ও উদ্যোক্তাদের ভিড় বাড়ছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি বাড়াতে পারি। ঢাকার আড়ংসহ বড় বড় শপিং মলে আমাদের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। রপ্তানিও হচ্ছে কিছু কিছু দেশে। তবে আর্থিক সহায়তা ও কাঁচামাটির সমস্যা বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, বাউফলের পালপাড়ার মৃৎশিল্প নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা লোন কার্যক্রমের পাশাপাশি ঢাকা থেকে ডিজাইন সহায়তাও দিচ্ছি। এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে কাজ করছে শিল্প সহায়তা কেন্দ্র।