বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, আমরা পরিবর্তিত বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচিত হচ্ছে।
ইনভেস্টমেন্ট সামিট সম্মেলন হয়েছে; এ সম্মেলন বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আবার ঘুরে দাড়াতে ঐতিহাসিক ভুমিকা পালন করবে বলে আমরা মনে করি। বর্তমান বাংলাদেশকে ঘুরে দাড়ানোর জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার কাজ করছে।
কিন্তু আমরা কেউ কেউ তাদেরকে কাজ করতে দিতে চাই না। শেখ হাসিনার বিচার না করে, মৌলিক সংস্কার না করে আমরা অনেকেই বলছি নির্বাচন নির্বাচন নির্বাচন। অন্তত দুটি মৌলিক কাজ সম্পূন্ন হওয়ার পূর্বে বাংলাদেশের কোন নাগরিক নির্বাচন চায়না।
একটি হচ্ছে সঠিক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সৎ, যোগ্য ও প্রকৃত দেশ গঠনের জন্য কাজ করবে। দ্বিতীয়ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৬ বছর ধরে যে সকল অপরাধ হয়েছে। এই শেখ হাসিনার দৃষ্টান্তমূলক আইনী প্রক্রিয়ায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এই দুটি ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশের মানুষ শুধু ক্ষমতার পালাবদল দেখতে চায় না। আমরা এমন একটি পদ্ধতি চাই; যেই পদ্ধতি প্রচলন হলে এই দেশে আর কোন ফ্যাসিস্ট মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না।
আজকে আমরা অন্তবর্তী সরকারের প্রধানের কাছে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি। দেশের সকল মানুষ তাকে সময় দিতে রাজি; সহযোগিতা করতে রাজি; শুধু ক্ষমতালোভীরাই বাধা সৃষ্টি করছে।
তিনি শুক্রবার ( ১১এপ্রিল) সন্ধ্যায় ফেনী শহর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ঈদ প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতানা কনভেনশন সেন্টারে শহর জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের মূল ভিত্তি ছিলো ন্যায় এবং ইনসাফের উপর বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করা। সকল বৈষম্য দূর করে নাগরিকদের সম্মান নিশ্চিত করাই ছিল মূল চেতনা।
এই চেতনাকেও আস্তে আস্তে হাইজাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেভাবে স্বাধীনতার চেতনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছে; সেইভাবে চব্বিশের চেতনাকেও হাইজাক করার চেষ্টা হচ্ছে। যারা রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ এনে দিয়েছেন; তাদের চিন্তার বাহিরে চিন্তা করে কেউ এদেশে আর বিজয়ী হতে পারবে না।
তিনি বলেন, পুরো রমাজান ব্যাপী আমরা ইলেক্ট্রিটিসির ব্যালকিবাজী দেখিনি, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে ছিলো, আল্লাহ তায়ালা দীর্ঘ ছুটিও মিলিয়ে দিয়েছিলো। ছুটিতে মানুষ স্বস্তির সাথে তাদের আত্মীয় স্বজনের কাছে পৌঁছতে পেরেছে। সব কিছু মিলিয়ে মানুষ কমেন্ট করেছে স্বস্তির সাথে রোজা রেখেছি; স্বস্তির সাথে আমরা ঈদ করেছি। বাংলাদেশ একটি ইসলামী রাষ্ট্র হলে পুরো ঈদের আনন্দ আমরা উপভোগ করতে পারবো। কিন্তু গাঁজায় আমাদের মুসলিম ভাইয়েরা ঈদ উদযাপন করতে পারেনি।
বোমা মেরে তাদের সন্তানদের ক্ষতবিক্ষত লাশ আমরা আকাশে উড়তে দেখেছি। সেখানকার মুজাহিদদেরকে দোলাতে দোলাতে অনেক কষ্ট দিয়ে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই; এই ইজরাইলীদের পরিচয় মানচিত্র থেকে মুছে যাবে ইনশাআল্লাহ।
ফেনী শহর জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সামাউন হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসি শুরা সদস্য ও ফেনী-২ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঞা, সাবেক জেলা জামায়াতের আমীর একে এম শামছুদ্দিন, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নান। সমাবেশে ফেনী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা আবদুর রহীম, মিডিয়া সম্পাদক আনম আবদুর রহীম, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ওমর ফারুক ভূঞা, ফেনী শহর শিবিরের সভাপতি ওমর ফারুক, জেলা শিবিরের সভাপতি আবু হানিফসহ জেলা ও উপজেলা জামায়াতের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেয়। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন নেতাকর্মীরা।
আপনার মতামত লিখুন :