যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগীর ছাড়পত্র দিচ্ছে ওয়ার্ডবয় ও আয়ারা। এসময় প্রতি ছাড়পত্র বাবদ ১শ’ টাকা করে আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওয়ার্ড ইনচার্জদের ইন্ধনে নিয়মবর্হিভূতভাবে দীর্ঘদিন ধরে তারা এই কাজ করে আসছে।
সরকারি হাসপাতালে অবৈধভাবে টাকা আদায়ের ঘটনায় রোগীর স্বজনদের সাথে প্রায় হট্টগোল হচ্ছে। ফলে দেশসেরা হাসপাতালটি সুনাম হারাচ্ছে।
জানা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড, পুরুষ- মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড ও প্রসূতি ওয়ার্ডে টাকা ছাড়া কোনো রোগীর ছাড়পত্র দেয়া হয়না। দায়িত্বরত সেবিকারা রোগীদের ছাড়পত্র বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে থাকেন ওয়ার্ডবয় আয়াদের।
ছাড়পত্র দেয়ার সময় তারা রোগী বা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ১শ’ করে টাকা আদায় করে থাকেন।
রোগীর কয়েকজন স্বজন জানান, ছাড়পত্র দেয়ার সময় তারা সরাসরি টাকা দাবি করেন। ভুক্তভোগীরা বেকে বসলেই শুরু হয় চিৎকার চেচামেচি। রোগীর স্বজনদের গালমন্দ শুনতে হয়।
সূত্র জানায়, অন্যান্য ওয়ার্ডে গোপনে ছাড়পত্র বাণিজ্য করা হলেও শিশু ওয়ার্ডে প্রকাশ্যে চলে। শিশু ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবি সোনিয়া ও আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারী আরিফ হোসেন রোগীদের ছাড়পত্র নিয়ে একটি টেবিলে বসেন।
এরপর রোগীর নাম ধরে টেবিলের কাছে ডাকেন।
এসময় প্রতিজনের কাছ থেকে ১শ’ টাকা নেয়ার পর ছাড়পত্র দেয়া হয়। এই অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই রোগীর লোকজনের গালমন্দ শুনতে হয়। অনেক সময় মারমুখি আচরণ করেন ওয়ার্ডবয় আয়ারা।
ভুক্তভোগী রোদেলা ইসলাম ও রাহাত হোসেন নামে দুইজন জানান, স্বেচ্ছাসেবি আয়া সোনিয়ার ব্যবহার খুব খারাপ। ছাড়পত্র দেয়ার আগে দম্ভের সাথে বলেন ১শ’ টাকা দেন তারপর ছাড়পত্র পাবেন।
ফলে তাদের মত অনেকেই ১শ’ টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এর আগেও ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নানা অজুহাতে টাকা আদায় করেন স্বেচ্ছাসেবি সোনিয়া ও আরিফ।
ভুক্তভোগী অনেকে জানান, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে রোগীর স্বজনেরা কতিপয় সেবিকা ও কর্মচারীদের কাছে জিম্মি হয়ে যান। তারা অনিয়ম জেনেও বাধ্য হয়ে তাদের টাকা দেন।
কেননা টাকা না দিলে ছাড়পত্রের সিরিয়ালের দুর্ভোগ ও চোখ রাঙানির শিকার হতে হয়। রোগী ও স্বজনদের অসহায়ত্ব মুহুর্তের কথা ভেবে এসব অনিয়ম বন্ধ করা উচিৎ।
এই ব্যাপারে শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সেবিকা জ্যোস্না আফরোজ জানান, সেখানে ৬ জন স্বেচ্ছাসেবি ওয়ার্ডবয় ও আয়া কাজ করে। হাসপাতাল থেকে তাদের বেতন দেয়া হয়না।
ফলে ছাড়পত্র বাবদ রোগীর ছাড়পত্র বাবদ ১শ’ টাকা নেন।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার ওবাইদুল ইসলাম কাজল জানান, আয়া-ওয়ার্ডবয়দের ছাড়পত্র বাণিজ্যের বিষয়টি তিনি শুনছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, রোগীর ছাড়পত্র বিতরণ করবেন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা। ওয়ার্ড বয়-আয়ারা রোগীর ছাত্রপত্র দেয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
তারা অবৈধভাবে ছাড়পত্র বাণিজ্য করছেন বলে শুনেছি। এটা বন্ধ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :