পহেলা বৈশাখের সঙ্গে ‘পান্তা ইলিশ’ কথাটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বাঙালিদের ঐতিহ্যে। এক দিন পরই সোমবার বাঙালির সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ পালিত হতে যাচ্ছে। আর বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবারের নাম বৈশাখের পান্তা ইলিশ।
সাগরে অবৈধ ট্রলিং দিয়ে ইলিশ নিধন বন্ধ করতে না পারলে বাঙালির পান্তা ইলিশ ঐতিহ্যটি থাকবে ইতিহাসের পাতায় পাতায়। ট্রলিং বোটের দৌরাত্ম্যে সাগরে মিলছে না অভিযোগ জেলেদের। ফলে পহেলা বৈশাখ ঘিরে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকায় পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাট থেকে বিক্রি হচ্ছে আকাশচুম্বী দরে।
বাংলা নববর্ষ কেন্দ্র করে ইলিশের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি বাজারে এখন এই মাছটির ঝাঁঝ ছড়াচ্ছে বেশ চড়া দামে। পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের শনিবারের সকাল বেলায় স্হানীয় বলেশ্বর, বিষখালী ও পায়রা নদীর দেড় কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ষাট হাজার টাকা দরে। একই ওজনের সাগরের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকায়।
এক কেজি পর্যায়ে নদীর ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক লাখ বিশ হাজার টাকা দরে। সাগরের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে আটানব্বই হাজার থেকে এক লাখ টাকায়।
পাথরঘাটা বিএফডিসি মার্কেটের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছের রেনু অবৈধ ট্রলিংয়ের জালে ধরা পড়ায় মাছ ক্রমাগত জেলেদের জালে মাছ ধরা কম পড়ছে।
মৎস্যশিল্প ব্যবসার পেশায় জড়িতরা রয়েছে লোকসানের মুখে। গুটিকয়েক অবৈধ ট্রলিং ব্যবসায়ীর জন্য আজকের এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ এসব ট্রলিং দিয়ে মৎস্য বিভাগকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেতে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে দ্রুত ব্যবস্হা গ্রহণের দাবি জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলছে, ১৫ এপ্রিল থেকে সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধের ঘোষণা করেছে সরকার। অথচ গতকাল থেকে অবৈধ ট্রলিং করে ৩০০ থেকে ৪০০ ক্যান বরফ ভর্তি করে সাগরে চলে যাচ্ছে। সাগরে মাছ সংরক্ষণ ও টেকসই আহরণ করতে সরকারের এই প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাছ নিধনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছে।
এদের আটকানো না গেলে ইলিশ মৌসুমে ইলিশ সাগরে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, এই মুহূর্তে সাগরে মাছ আকারে বৃদ্ধি হচ্ছে। আর এসব অবৈধ ট্রলিং বোটের জাল চিকন ফাঁসের। এদের এই ক্ষতিকর জালে ছোট মাছ ধরা পড়বে। ফলে মৌসুমে বড় মাছ পাওয়া যাবে না।
এই খাতে যারা বিনিয়োগ করে আছে তারা পড়বে বিরাট লোকসানের মুখে। তেমনি জেলেরা কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেলে তারাও তাদের পরিবার পরিজন পড়বে ক্ষতির মুখে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন বলেন, সাগরে অবরোধ চলাকালে সাগরে কেউ যেতে না পারে আমরা ব্যবস্হা গ্রহণের পাশাপাশি তাদের আইনের আওতায় আনব।
সাগরে অবৈধ ট্রলিং দিয়ে যারা দেশের সম্পদ ধ্বংস করছে তাদের তালিকা ধরে ধরে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। সরকারের দেয়া সময়ের মধ্যে যারা সাগরে মাছ ধরা হবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্হা নেয়া হবে। এবার মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করে হবে বলে তিনি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :