খুলনার পাইকগাছায় অনাবৃষ্টি আর তাপদাহে আমের গুটি ব্যাপক হারে ঝরে পড়ছে। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষি ও আম ব্যবসায় জড়িত বেপারিরা। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আম গাছে প্রচুর মুকুল ধরেছিল ও আমের গুটি ধরেছে।
খুলনার পাইকগাছার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। দেখা নেই বৃষ্টির। উপকূলে লবণ হাওয়ায় তাপমাত্রা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। তবে বৃষ্টির অভাবে গুটি ঝরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আম চাষি ও বাগান মালিকরা।
উপজেলায় ৬১৫ হেক্টর জমিতে মোট আম গাছ রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার। প্রায় ৭ শতাধিক আম বাগান রয়েছে। এসব বাগানে সর্বনিন্ম ২০টি গাছ রয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো ছোট ছোট আম গাছ আছে। আম বাগান থেকে চলতি মৌসুমে সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন আমের ফলন পাওয়ার সম্ভবনা ধরা হয়েছে।
কিন্তু বর্তমানে অনাবৃষ্টি ও তাপদাহে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে স্বপ্নের সেই আমের গুটি। যদিও কেউ কেউ রাত ও খুব ভোরে গাছের গোড়ায় সেচ ও স্প্রে করে চেষ্টা করছেন আমের গুটিকে বাঁচানোর। কিন্তু অধিকাংশ চাষি পুঁজি এবং পানির অভাবে সেচ দিতে পারছেন না। তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে বৃষ্টির অপেক্ষায়।
সরজমিনে দেখা যায়, আমগাছের নিচে দেখা যায় অসংখ্য ছোট, মাঝারি ও বড় আমের গুটি ঝরে পড়ে রয়েছে।
উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের আমবাগান মালিক নবদ্বীপ মল্লিক বলেন, খরার কারণে আমের গুটি ঝরে পড়ছে। তারপর বৃষ্টির দেখা নেই। দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। বাগানের গাছে তিন ভাগের এক ভাগ আম ঝরে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আম নিয়ে বেকায়দায় রয়েছি।
ভদ্রদিয়া গ্রামের আমচাষি জগদীশ মন্ডল বলেন, তীব্র খরার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। আমগাছে সেচ ও কীটনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করেও গুটি টেকানো যাচ্ছে না। এ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তায় রয়েছি।
হরিঢালীর আম ব্যবসায়ী মো. মাহবুব সরদার বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় আমের গুটি পড়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ছোট ছোট কাঁচা আম পেরে বিক্রি করছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একরামুল হোসেন জানান, তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আমের গুটি কিছু ঝরছে। তবে এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি অফিসারসহ উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের পাশে আছে ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আমচাষিদের গাছের গোড়ায় পানি দেওয়াসহ ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেন।
আপনার মতামত লিখুন :