সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নে এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা আতিকুর রহমান শান্ত এবং তার পরিবারের সদস্যরা এই নির্যাতনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের প্রধান সদস্য বিগত ১৮ বছর ধরে মালদ্বীপে অবস্থান করছেন। তিনি একজন দর্জি হিসেবে কর্মরত থেকে বিদেশে অবস্থান করেও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার অনুপস্থিতির সুযোগে তার সৎ ভাই ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ির নারীদের প্রতি অশালীন ভাষা প্রয়োগ, শারীরিক নির্যাতন, হুমকি এবং ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে চলেছেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগে আরও জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি দলীয় পরিচয়কে পুঁজি করে তার অনুসারীদের নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়ির সামনে জড়ো হন, ভয়ভীতি দেখান এবং গুমের হুমকি পর্যন্ত দিয়ে থাকেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনাটি নিয়ে একাধিকবার থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রাম্য সালিশ এবং পুলিশের হস্তক্ষেপের পরও নির্যাতনের মাত্রা কমেনি। বরং রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার পরিবার আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি একটি জমি দখল নিয়ে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছে। ৫ আগস্টের পর থেকে আবারও শুরু হয় নতুন করে নির্যাতন। ঘটনার মধ্যে ছিল বৃদ্ধ দাদিকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া, প্রকাশ্যে গালিগালাজ, পরিবারকে হুমকি দেওয়া ইত্যাদি। এসব ঘটনাই ঘটেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সদস্যদের সামনেই।
ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্য জানান, ‘আমরা কখনো কারো হক মারিনি, শুধু শান্তিতে বাঁচতে চেয়েছি। আমার বাবা বিদেশে থেকে দিনরাত পরিশ্রম করে টাকা পাঠান, আর সেই কষ্টের টাকায় কেনা জমি দখলের চেষ্টা চলছে। আমরা শুধু চাই নিরাপদে থাকতে।’
এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নির্যাতনের শিকার পরিবারটি।