পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলার সময় বিএনপি নেতাদের সামনেই উপজেলা পরিষদের কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেলের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা পরিষদের মুক্ত মঞ্চ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক, আবু হোসেন, ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি। তাদের মধ্যে এমদাদুল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেল বলেন, ‘আমি রাগ কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারিনি। একটা চড় মেরেছি। খাবার বিতরণে অনিয়ম ও সিনিয়র নেতাদের অপমান করায় এমনটি হয়েছে। তবে আমার ভুল হয়েছে।’
ঘটনার সময় বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন, থানার ওসি মমতাজুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউএনও বলেছেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হাজার লোকের আয়োজন ছিল। সেখানে এমন ঘটনা ঠিক হয়নি। আহত তিন কর্মচারীকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক বলেন, এ ঘটনায় ইউএনওর কার্যালয়ের কর্মচারীর একটি অভিযোগ পেয়েছি।
জানা গেছে, সোমবার উপজেলা পরিষদের ভেতর মুক্তমঞ্চে বাংলা ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানের ফাঁকে উপজেলা পরিষদ ও ইউএনও অফিসের কয়েকজন কর্মচারী আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য পান্তা, মাছ, ভর্তা ও পানি আপ্যায়নের ব্যবস্থা করছিলেন।
এ সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল ও তার সহযোগীরা খাবার নিয়ে বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনেই তারা বেধড়ক মারধর করে তিনজনকে আহত করেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি বলেন, সুন্দর পরিবেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। এর ফাঁকে অতিথিদের জন্য পান্তা উৎসব শুরু করার জন্য আমরা কয়েকজন নিয়োজিত ছিলাম।
আমাদের কাজের ফাঁকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল নিজেই খাবার নিতে শুরু করেন। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের পিটিয়ে আহত করে।
অনুষ্ঠানের সামনের অংশে আমরা ছিলাম। ঘটনা আমাদের থেকে অনেক দূরে উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল বলেন, এমন একটি অনুষ্ঠানে এই আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন আচরণের পর আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে এসেছি।
অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা উপজেলা বিএনপির দায়িত্বে রয়েছি, ওরা পৌর কমিটির। তারপরও নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :