দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মহদিপুর শিব-কালী-দুর্গা মন্দির চত্বরে সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বসেছিল দুইশ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মণ্ডপ মেলা। মেলাটিতে বিভিন্ন গ্রামের নারী-পুরুষের ঢল নেমেছে।
মেলাকে কেন্দ্র করে বসেছিল বিভিন্ন মিষ্টি মন্ডার দোকান, মেলায় খাবারের মধ্যে সবার কাছে প্রিয় ছিল গুড়ের জিলাপি। বসেছিল মেয়েদের প্রসাধন সামগ্রীর দোকান, ছিল পরিবারের দা-বঁটি, খন্দা, ছলনা প্রভৃতির দোকানও। শিশুদের জন্য নানা রঙের বেলুন ও খেলাপাতির দোকান ছিল দেখার মতো। ছিল শাক-সবজির দোকানও।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় পুরুষ দর্শনার্থীর চেয়ে নারীদের সংখ্যাই ছিল আধিক্য। মেলায় আগত সনাতন ধর্মাবলম্বী সব বয়সি নারী ও পুরুষ মেলায় প্রবেশ করেই শিব-কালী ও দুর্গা মন্দিরে গিয়ে পূজা অর্চনা করেই মেলায় ঘুরতে বেরিয়েছেন।
মেলায় আগত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সনাতন ধর্মাবলম্বী কলেজ শিক্ষার্থী অমলী হেম্ব্রম ও পাওয়ালিয় হেম্ব্রম বলেন, ছোটবেলা থেকেই নিজ নিজ মায়ের হাত ধরে পহেলা বৈশাখের এই মেলায় মন্দিরে পূর্জা অর্চনাসহ মেলা দেখাতে আসা হয়।
এখন তারা একাই চলে আসের ধর্মীয় অনুভূতিসহ মেলার টানে। বছরে একবার গ্রামের মধ্যে মেলাটি সবাইকে কিছুটা হলেও বিনোদন দিয়ে থাকে। মেলায় দেখা হয় নতুন ও পুরোনো সতীর্থ শিক্ষার্থী বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে।
মেলায় আগত ফুলবাড়ী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের সাংগঠনিক সম্পাদক হিরেন্দ্র নাথ বর্মন হিরু বলেন, পহেলা বৈশাখে মন্দির চত্বরে মেলায় ঘোরাঘুরির মাধ্যমে মন্দির দর্শন ও পূজা অর্চনাও হয়ে যায়, এ জন্য প্রতি বছরই পরিবার নিয়ে মেলায় আসা হয়। কিছু সময়ের জন্য হলেও খুব আনন্দ উপভোগ করা যায়। আবার মেলায় আসলে অনেক আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা সাক্ষাতও হয়ে যায়।
শিব-কালী-দুর্গা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী মহেন্দ্র নাথ সরকার মন্টু বলেন, তার বয়স এখন ৮৪ বছর। তিনিও জানেন না এ মেলা কবে থেকে শুরু হয়েছে। তবে বাপ-দাদার কাছে যে কথা শুনেছেন তাতে এ মেলার বয়স এখন প্রায় দুইশ বছর পার হয়ে গেছে।
প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে এ মণ্ডপ মেলা মন্দির চত্বরে বসে। মেলা দেখতে বিভিন্ন এলাকার সব সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। এখন পর্যন্ত এ মেলায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আপনার মতামত লিখুন :