জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বহিরাগত ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিয়ে এক সন্ত্রাসীকে বিদেশি পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ ধরে গণপিটুনি দিয়েছে। পুলিশ এসে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সোমবার রাত সোয়া ১০টায় বাংলা নববর্ষের দিন পাঁচবিবি সুপার মার্কেটের নিউ গার্মেন্টস নামে একটি দোকানের সামনে এ হামলা ও গুলি ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে।
পিস্তলসহ আটক ব্যক্তি হলো- মো. রুবেল হোসেন (৩৪)। তিনি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার বাসিন্দা বলে থানা-পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন ও স্থানীয় দুই সাংবাদিকসহ পাঁচবিবি সুপার মার্কেটের নিউ গার্মেন্টস নামে একটি দোকানের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন।
রাত সোয়া ১০টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে ৬ জন অপরিচিত ব্যক্তি সেখানে আসে। তারা ছাত্রদলের সাবেক নেতা শামীম হোসেনকে দেখতে পেয়ে তার ওপর হামলা করে। শামীম হোসেন তাদের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে দৌড়ে নিরাপদে চলে যান। সেখান থেকে অপরিচিত ৬ ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেলে চড়ে দ্রুত রেলগেটের দিকে পালিয়ে যায়।
শামীম হোসেনের চিৎকার ও গুলির শব্দ পেয়ে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তাদের ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে রেলগেট এলাকায় রাঁখি হোটেলের সামনে মোটরসাইকেলে ধাক্কা লেগে তিন ব্যক্তি পড়ে যায়। সেখানে তারা মোটরসাইকেল ফেলে রেখে দ্রুত সটকে পড়ে।
খোঁজাখুঁজির পর লোকজন রেলগেট এলাকায় একজনকে পিস্তলসহ ধরে ফেলেন। উত্তেজিত লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
রাতেই সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।
সাবেক ছাত্রদল নেতা শামীম হোসেন বলেন, পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান সাবিকুন নাহার শিখার স্বামী শাহ কামালের বাড়ি ফরিদপুরে। সাবেকুন নাহার শিখা গত ২৭ রমজান পাঁচবিবি দানেজপুর ডিগ্রি কলেজ মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন।
বিক্ষুব্ধ লোকজন আগের রাতে ইফতার মাহফিলের প্যান্ডেল ভাঙচুর করায় ইফতার মাহফিল পণ্ড হয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাবেকুন নাহার শিখার স্বামী শাহ কামাল তার বাড়ি ফরিদপুর থেকে ৬ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে আমাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাবেকুন নাহার শিখার স্বামী শাহ কামালের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
হোয়াটস্যাপে যোগাযোগ করা হলে পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাবেকুন নাহার শিখা বলেন, আমরা সপরিবারে দেশের বাইরে আছি। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে শামীমের আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শামীম আমার ইফতার মাহফিল আয়োজনে হামলার পর লোকজনের কাছে জিরো হয়েছিলেন। এখন গুলির নাটক সাজিয়ে লোকজনের কাছে হিরো সাজাতে চাচ্ছেন।
পাঁচবিবি থানার ওসি মইনুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের সাবেক নেতা শামীমের ওপর হামলা হয়েছিল। বিদেশি পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি ফরিদপুরের বাসিন্দা। অভিযোগ দায়ের হয়েছে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :