ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

সিলেটে ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

সিলেট ব্যুরো
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম
সিলেটে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

৬ দফা দাবিতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

দুপুর ১টার দিকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে অবরোধকালে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ।

শিক্ষার্থীরা জানান, পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কেবল কারিগরি শিক্ষা সেক্টর সংস্কারের উদ্দেশ্যেই। বাহ্যিক কোনো উদ্দেশ্যে এই আন্দোলন হচ্ছে না। সারা দেশে কারিগরি শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করতে এবং যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাজপথ থেকে তৈরি হয়েছে ‍‍‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ‍‍’। কারিগরির লাখো শিক্ষার্থীর আশা, ভরসা ও স্বপ্ন বর্তমান বৈষম্যহীন সরকার পূরণ করবে বলে তাদের প্রত্যাশা।

আন্দোলনকারীরা শিক্ষার্থীদের ৬ দাবি

১. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কতৃর্ক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে। সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

২. ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিলসহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করতে হবে। একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিক সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।

৩. উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (১০ম গ্রেড) পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪. কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে। তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। পদগুলোতে অবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

৫. কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরাবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‍‍‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়‍‍’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

৬. পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

আন্দোলকারীরা আরও জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এরই মধ্যে দাবিগুলো না মানলে সেখান থেকে পরবর্তী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।