শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ০৬:৫৮ পিএম

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে তিন শতাধিক বসতভিটা বিলীন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ০৬:৫৮ পিএম

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে তিন শতাধিক বসতভিটা বিলীন

ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে অসময়ে পানি বাড়ায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের দুই পাড়ে। গত ১০ দিনে বিলীন হয়েছে সাতটি বসতভিটা, শতাধিক বিঘা ফসলি জমিসহ গ্রামীণ সড়ক। 

এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে রসুলপুর মারকাজ জামে মসজিদ, রসুলপুর আলহাজ রোস্তম আলী নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, রসুলপুর ঈদগাহ মাঠ, বেগম নুরুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফসলি জমিসহ শতাধিক বসতবাড়ি। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। অনেকের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের শিকার হচ্ছে ওই জমি ও স্থাপনা। বছরের পর বছর ভাঙনে বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেকে। ভাঙনের হুমকিতে থাকা পরিবারগুলো তাদের বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে গত দশ দিনে ইউনিয়নের রসুলপুরের দক্ষিণের সাতটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়াও রসুলপুর পশ্চিম পাশে এক মাসে ৭০-৮০টি বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। তা ছাড়া দুই বছর ধরে থেমে থেমে ভাঙছে ইউনিয়নের রসুলপুরসহ ভোগলেরকুটি, সরকার পাড়া, কবিরাজ পাড়া ও মুছল্লী পাড়া এলাকা। 

এতে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে ইউনিয়নের মানচিত্র। এখন পর্যন্ত এসব গ্রামের তিন শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে থাকা পরিবারগুলো ভাঙন আতঙ্ক নিয়ে রাত্রিযাপন করছেন। গ্রামীণ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় বিচ্ছিন্নের পথে যোগাযোগব্যবস্থা। 

ভাঙনের মুখে রয়েছে একটি মাদরাসা, একটি মসজিদ ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে শিশুদের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় স্থানীয়রা। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, সরকারিভাবে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে নদীগর্ভে পুরোপুরি বিলীন হতে পারে এসব গ্রাম।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ জমেলা খাতুন বলেন, ‍‍‘এখানে একটি দোকান, একটি ধান ভাঙানোর মিল ছিল আমাদের। এখন তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে আমাদের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সন্তানদের ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে বিপাকে পড়ছি। ভাঙন আতঙ্কে আমাদের ঘুম হারাম হয়েছে। ভয়ে থাকি, নদীভাঙনে না জানি আমাদের গ্রামটি কখন বিলীন হয়।‍‍’

রসুলপুরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জেলহক বলেন, ‍‍‘এখানে আমাদের ৬০ বছরের বসতি ছিল। যা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গাছপালাও রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। গ্রামের পর গ্রাম বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে।‍‍’

আলহাজ রোস্তম আলী নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষক নাজমুল আহসান বলেন, ‘রসুলপুর মারকাজ মসজিদ ও রসুলপুর নূরানী মাদ্রাসা এ এলাকার একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে ২০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। প্রতিষ্ঠান দুটি ভাঙনের মুখে রয়েছে। যা ভেঙে গেলে এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা থেকে ছিটকে পড়বে। তাই নদীভাঙন রোধে দ্রুত সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।‍‍’

বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বাবলু মিয়া বলেন, ‍‍‘বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন ব্রহ্মপুত্রসহ তিনটি নদী দিয়ে বেষ্টিত। নদীগুলোতে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ভাঙন অব্যাহত। ভাঙনের গতি দিনে দিনে তীব্রতর হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ইউনিয়নের আশি শতাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীতে বিলীনের পথে বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন। ভাঙনের মুখে রয়েছে একটি মাদ্রাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদ। যা সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। তাই সরকারের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি, ইউনিয়নটিকে রক্ষা করুন।’ 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মো. ময়দুল ইসলাম র‌নি বলেন, ‍‍‘বর্তমানে রাজারহাট উপজেলা ও উলিপুর উপজেলায় তিস্তা নদীতে ৬.৫ কিলোমিটার জরুরি সতর্কতামূলক কাজ চলমান। এ ছাড়াও উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে জরুরি ভিত্তিতে ১ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ইয়ুথ নেটে জরুরি সর্তকতামূলক কাজ চলমান। কোথাও ভাঙন দেখা দিলে উদযাপন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে বরাদ্দ প্রাপ্তির মাধ্যমে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেব।‍‍’

আরবি/আরএইচ

Link copied!