ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ‘ওপেন হাউস ডে-২০২৫’ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা সামশুল হককে অতিথির আসনে দেখা গেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের আয়োজনে আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ অনুষ্ঠান হয়। এতে পুলিশ, রাজনীতিবিদ ও স্থানীয়রা অংশ নেন। সেখানে সামশুল হককে দেখা যায়।
সামশুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যার অভিযোগে করা মামলার আসামির বাবা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন বালিয়াডাঙ্গী-রাণীশংকৈল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার স্নেহাশীষ কুমার দাস। তার বামপাশে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি শওকত আলী সরকার, ভানোর ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি ইলিয়াস আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা শেখ আইয়ুব আলী এবং ডান পাশে বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী, তার পাশে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সামশুল হক বসে আছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর ঠাকুরগাঁও সদর থানায় শহীদ আবু রায়হানের বাবা ফজলে ওরফে রাসেদ গত ২ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার আসামি বকুল আমজানখোর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সামশুল হকের ছেলে। এ ছাড়াও তার আরেক ছেলে নাসিরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও আদালতে অ্যাডভোকেট মওদুদ আহম্মেদের দায়ের করা জমিদখল, হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামির স্বজনদের পুলিশের সভায় অতিথির আসনে বসানো অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেইমানি করার শামিল।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া জামায়াত নেতা ইলিয়াস আলী বলেন, ‘কে আসামি, কে ভালো মানুষ, এটি শনাক্ত করবে পুলিশ। তারাই যদি অতিথির আসনে বসতে দেয়, আমাদের কিছু করার নেই। তবে বিষয়টি জানার পর আমারও খারাপ লাগছে। জুলাই অভ্যুত্থান এ দেশের মানুষের গর্ব ও অহংকারের জায়গা।’
জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি শওকত আলী সরকার জানান, মামলাটি ঠাকুরগাঁও সদর থানায়। এ বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না।
উল্টো সাংবাদিককে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘আপনি জানেন তো আগে বললেন না কেন? এখন বলে কী হবে। অন্য থানার মামলার আসামি কিংবা তার স্বজন সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকে না আমাদের কাছে।’
একই মন্তব্য করেন বালিয়াডাঙ্গী-রাণীশংকৈল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার স্নেহাশীষ কুমার দাস। তিনি বলেন, ‘পুলিশ সুপারের নির্দেশে জনবান্ধব পুলিশ এবং মানুষের দোরগোড়ায় পুলিশের সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। এ জন্যই ওপেন হাউজ ডে আয়োজন।’
হত্যা মামলার আসামির স্বজন অতিথির আসনে থাকার বিষয়ে তিনি খোঁজ নেবেন বলে জানান।