শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

লাকসামে মাদ্রাসাছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

লাকসামে মাদ্রাসাছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

ইকরা মহিলা মাদ্রাসা। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার লাকসামে ইকরা মহিলা মাদ্রাসার ৫ তলার জানালার ফাঁক দিয়ে লাফিয়ে পড়ে এক ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহত ছাত্রীর নাম সামিয়া আক্তার (১২)। সে নাঙ্গলকোট উপজেলার দায়েমছাতী ইউনিয়নের নাওগোদা গ্রামের প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থী মারা যায়।

সংবাদ পেয়ে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের লাকসাম বাইপাস নোয়াখালী রেলগেট এলাকার ইকরা মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করে সামিরা মা শারমিন আক্তার।

পূর্বের মাদ্রাসায় পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ায় তাকে ইকরা মাদ্রাসার আবাসিকে ভর্তি করা হয় গত রমজানের মাঝামাঝি। এক সপ্তাহ আগে নতুন বছরের ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু ঐ ছাত্রী আবাসিকে থাকতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে।

বৃহস্পতিবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐ ছাত্রী তার মাকে ফোন করে। রাতে সবার অজান্তে জানালার ফাঁক দিয়ে সে নিচে লাফ দেয়। এতে তার হাত ও পাঁজরের হাঁড় ভেঙে যায়।

স্থানীয় লোকজন ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসালয়ে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ঢাকায় রেফার করে। ভোর ৫টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করেন।

পরে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানা পুলিশ লাকসাম থানায় খবর দিলে শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে।

সামিরার মামা নাছির উদ্দিন ও একই বাড়ির চাচা সৈকত বলেন, আমাদের কোনো অভিযোগ ছিল না। পোস্টমর্টেম ছাড়া মরদেহ দাফন করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছি। পুলিশ পোস্টমর্টেম ছাড়া মরদেহ দাফন করতে দেয়নি।

তাই আমরা থানায় অভিযোগ করব। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জোর করে মেয়েটিকে আবাসিকে রেখেছে। পাঁচতলা থেকে পড়ে হাঁড়গোড় ভাঙেনি। সে রাস্তার পাশে পড়ে কাঁদছিল, বিষয়টি সন্দেহজনক। মেয়েটির মৃত্যুর সাথে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জড়িত।

মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা জামাল উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় মাদ্রাসার পাশের লোকজন মেয়েটিকে রাস্তায় পড়ে কাঁদতে দেখে আমাকে ফোন দেয়। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ তাকে পার্শ্ববর্তী ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাই।

সেখানে ডাক্তার না থাকায় আমেনা মেডিকেলে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, মেয়েটিকে রমজানের মাঝামাঝি এখানে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ সে এখানে অবস্থান করছে। তাদের গ্রামের আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা সে ঠিকমতো পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল না।

তাই অভিভাবক আমাদের আবাসিকে তাকে রেখেছে। ঘটনার আগেরদিন সামিরা বাড়ি যেতে চেয়েছিল। তার মা একদিন পর তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। এরমধ্যে মেয়েটি জানালার ফাঁক দিয়ে লাফিয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, মাদ্রাসা মুহতামিম আর নিহতের পরিবারের কথায় অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। এ মাদ্রাসায় পূর্বেও বহু ঘটনা ঘটেছে। অজানা কারণে ওইসব ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন না হলে সামনে এমন আরও বহু ঘটনা ঘটবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লার সহকারী পুলিশ সুপার (লাকসাম সার্কেল) সৌমেন মজুমদার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জানালার মধ্যখানে একটি রড ফাঁকা রয়েছে। ঐ ফাঁক দিয়ে সে লাফিয়ে পড়তে পারে।

ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নিহতের পরিবার বা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কেউ বিষয়টি পুলিশকে জানায়নি। পরে ওইদিন রাত ১০টার দিকে লাকসাম থানায় লিখিতভাবে একটি অপমৃত্যু সংবাদ দেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!