ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

ভারতের কারাগারে আটক স্বামীর অপেক্ষায় স্ত্রী-সন্তান

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম
ভারতের জেলে আটক বকুলের স্ত্রী আজেদা বেগম। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ৬ মাস ধরে ভারতের জেলহাজতে আটকা রয়েছেন কুড়িগ্রামের ৭ জেলে। ভারতের সীমান্তবর্তী জিঞ্জিরাম নদী হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে মাছ ধরতে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় হাজতে আটক রয়েছেন তারা।

আটক ৭ জেলের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায়। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে হাজতে আটক থাকলেও কীভাবে তাদের ফেরানো যায়, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।

যতই দিন যাচ্ছে চিন্তা বেড়েই চলছে। তবে কোনো সমাধানের পথ না পাওয়ায় চিন্তার মাথায় নিয়েই পার করছেন দিন। পরিবারের রোজগারে মানুষ না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসার উপক্রম সেসব পরিবারের।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর তাদের আটক করে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী-বিএসএফ। এর পর থেকে তাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না জেলে পরিবারের সদস্যরা। সম্প্রতি ভারতের আমপাতি জেলার মাহিন্দগঞ্জ থানার তুরা মেঘালয় থানা এলাকার এক বাসিন্দার মাধ্যমে গোপনে পাঠানো চিঠির মাধ্যমে তাদের সন্ধান মেলে।

আটক জেলেরা হলেন, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের হরিণের বন্দ এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), রমনা ব্যাপারী পাড়া এলাকার বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), শামছুল হকের ছেলে মীর জাহান আলী (৪৫), মৃত এছাহক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), পকের আলীর ছেলে আমির আলী (৩৫)।

এ ছাড়াও রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী ব্যাপারী পাড়ার জরিপ উদ্দিনের ছেলে আঙ্গুর হোসেন (২০), রৌমারী উপজেলার যাদুর চর বকবান্ধা এলাকার ছলিম উদ্দিনের ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।

আটক থাকা বকুলের স্ত্রী আজেদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ৬ মাস ধরে ভারতের জেলে আটকা আছে। কয়েক দিন আগে একটা চিঠি পাঠায়। পরে আমরা এক উকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তিনি দুই লাখ টাকার কথা বলে। স্বামী নেই, এমনিতে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে আছি। কোনোরকমে বাচ্চাদের মুখে দু-মুঠো ভাত তুলে দিচ্ছি। আমার স্বামীকে ফেরাতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’

রমনা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আঁকা বলেন, ‘এ ঘটনা এর আগেও ঘটেছিল। ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের কারণে তারা আটক হন। ভারতীয় হাজতে আটকরা রাজীবপুরের জিঞ্জিরাম নদীর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক হন। আমরা ভুক্তভোগী পরিবারকে যাবতীয় সহযোগিতার চেষ্টা করছি।’

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক বলেন, ‘বিষয়টি আসলে আমাদের হাতে নেই। তবে ভারতে আটকা পড়া জেলেদের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’