নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত আওয়ামী লীগের ২নং রেলগেট কার্যালয় এখন রূপ নিয়েছে একটি বাকরখানির দোকানে। রোববার (২০ এপ্রিল) রাতের বেলায় সেখানে রাজনৈতিক আলোচনা কিংবা দলীয় কার্যক্রমের পরিবর্তে দেখা যায় বাকরখানি বিক্রির দৃশ্য। কার্যালয়টি হঠাৎ করে এমনভাবে বাণিজ্যিক ব্যবহারে চলে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনের অংশে দোকান বসিয়ে বাকরখানি বানানো ও বিক্রি করা হচ্ছে। দুজন কর্মচারী বাকরখানি বানাচ্ছে। অপরজন বাকরখানি বিক্রি করছেন।
দোকানের কারিগর মনা মিয়া বলেন, সুমন ও জুম্মান ভাই গত তিন দিন ধরে এখানে দোকান বসিয়েছে। তারা দুজন আমাদের দোকানের মালিক। আমরা শুধু দোকানের কারিগর। আমিসহ তিনজন কারিগর দোকানে কাজ করি। আমাদের প্রত্যেককে সাড়ে ৩শ টাকা থেকে বিভিন্ন অঙ্কের দৈনিক মজুরি দেওয়া হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার বাকরখানি বিক্রি হয়।
দোকান মালিক মো. সুমন মিয়া বলেন, অনেক দিন ধরে অফিসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। মাদকসেবিদের আড্ডাখানা ছিল কার্যালয়টি। ময়লা-আবর্জনা দিয়ে নোংরা অবস্থায় ছিল। সেই ময়লা পরিষ্কার করে জাসাসের জেলার এক নেতা এখানে দোকান বসিয়ে দিয়েছে। তবে তার নাম বলা যাবে না।
দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দেখভাল করে আসছিলেন মো. সবুজ মিয়া। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে আওয়ামী লীগ নেতারা কেউ প্রকাশ্যে নেই। এই সুযোগে অনেক ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা টিন দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার দুটি মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি এখানে একদল এসে বাকরখানির দোকান বসিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এই সময়ে প্রতিবাদ করা বা বাধা দেওয়া সম্ভব নয়। উল্টো এ নিয়ে কথা বললে আমাদেরকে রোষানলে পড়তে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর কার্যালয়টি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। সেখানে মানুষজন প্রশ্রাব করত ও ময়লা-আবর্জনা ফেলত। আগে থেকেই কার্যালয়ের আশপাশে দোকানপাট ছিল। এখন কে বা কারা সেখানে দোকান বসিয়েছে তা জানা নেই। তবে এটার সঙ্গে বিএনপির কেউ সম্পৃক্ত নেই।