ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে বন্ধুকে গলা কেটে হত্যা

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ০৮:৩৮ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে বন্ধুকে গলা কেটে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মো. সেলিম হোসেন এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।

নিহত রাশেদুল ইসলাম (৪০) সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর সদরের পশ্চিম ওয়াপদাবাঁধ এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে এবং পেশায় পিকআপ চালক। গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে তাড়াশ পৌরসভার আসানবাড়ি এলাকার একটি ধানখেত থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আসানবাড়ি গ্রামের মৃত সামছুল হোসেনের ছেলে ও রাশেদুল ইসলামের বন্ধু মো. সেলিম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পরে সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করলে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সেলিমের স্ত্রী শেরজা আউয়াল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যান, কিন্তু তালাক না হওয়ায় স্ত্রীকে ফিরে পেতে মরিয়া ছিলেন কিলার সেলিম। এই কারণে আউয়ালের প্রতি ক্ষোভ জমতে থাকে। মাসখানেক আগে নিজ ঘরে কাগজ খুঁজতে গেলে স্ত্রী শেরজার ব্যাগে প্রেমিক আউয়ালের একটি মানিব্যাগ, ছবি, সিমের কাগজ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি খুঁজে পান তিনি।

তখনই পরিকল্পনা করেন, বন্ধুকে হত্যা করে সেই মানিব্যাগ মরদেহের পাশে রেখে দিলে আউয়ালকে ফাঁসানো যাবে এবং স্ত্রীকে ফিরে পাওয়া যাবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, পহেলা বৈশাখের আগে সেলিম একটি মেমোরি কার্ড, ঘুমের ওষুধ ও বাংলা মদ সংগ্রহ করেন। ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাশিদুলকে মদ খাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ধানখেতে নিয়ে যান। স্পিড বোতলে মিশিয়ে দেন ঘুমের ওষুধ, আর ক্লেমনে রাখেন শুধুই মদ। রাশেদুল অচেতন হলে কোমর থেকে ছুরি বের করে তাকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে ধানখেতেই মরদেহ ফেলে রেখে বাড়ি ফিরে যান তিনি।

হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, ঘুমের ওষুধযুক্ত স্পিড বোতল, ক্লেমনের বোতল, মানিব্যাগ, রাশিদুলের মোবাইল ও একটি মেমোরি কার্ড উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মো. একরামুল হোসাইন বলেন, বন্ধু রাশেদুলকে হত্যা করে স্ত্রীর প্রেমিক আউয়াল এর পরিচয় শনাক্তের কিছু জিনিস মরদেহের পাশে রাখেন সেলিম। যেন, সবাই সন্দেহ করে আউয়াল হত্যা করেছে। আউয়াল ফেঁসে গেলে সে আবার তার স্ত্রীকে ফিরে পেতেন।