ঢাকা বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

পঞ্চগড়ে বিএনপির অফিসে প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পঞ্চগড়ে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিএনপির অফিসে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে ওই শিক্ষককে বিএনপি নেতার পছন্দের ব্যক্তিকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। 

এমনকি মুখ ও গলা চেপে ধরেন বলেও অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে প্রাণভয়ে পার্টি অফিস থেকে পালিয়ে যান তিনি।  

সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারি উপজেলা বিএনপি অফিসে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তি উপজেলার ধামোর হাট আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার।

এ নিয়ে ওই দিন রাতে মারধরের বিচার চেয়ে আটোয়ারি উপজেলার ক্রেডিট ইউনিয়ন কো অপারেটিভ লিমিটেড (কাল্ব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

আব্দুল জব্বারের সঙ্গে তড়েয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান, তোড়েয়া আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম প্রধান এবং সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিমসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

তবে, সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আটোয়ারি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বজলার রহমান জাহেদ ও সদস্যসচিব কুদরত-ই খুদা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আটোয়ারি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বজলার রহমান সোমবার রাত ৮টার দিকে আমাকে মুঠোফোনে কল করে পার্টি অফিসে আসতে বলেন। আমি পার্টি অফিসে যাওয়া মাত্রই সদস্যসচিব কুদরত-খুদা দরজা বন্ধ করে দেয়।’

এ সময় উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমাদের পছন্দের ব্যক্তিকে কেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করা হয়নি। অন্য ব্যক্তিকে কেন সভাপতি করা হয়েছে।’

আমি তাদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছি, ‘আমি নীতিমালা অনুযায়ী দু’জন বিএনপি নেতাসহ তিনজনের তালিকা জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণ করেছি। জেলা প্রশাসক সুপারিশ করে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে তালিকা প্রেরণ করেন। দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের গঠনতন্ত্র মোতাবেক ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়।’ 

এমন কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে মুখ-গলা চেপে ধরেন কুদরত-খুদা। এ সময় কুদরত বলেন, তিনদিনের মধ্যে কমিটি পরিবর্তন না করলে আমাকে বাড়ি থেকে তুলে মারধর করার নির্দেশ দেন উপস্থিত ১০-১২ জন নেতা-কর্মীকে। তাৎক্ষণিক আামি প্রাণ বাঁচাতে কোনোমতে বিএনপি অফিস থেকে পালিয়ে যাই। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’

আব্দুল জব্বার ক্যামেরার সামনে বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষক। মারধরের পর লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না। আমি এর বিচার চাই।’

আটোয়ারি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বজলুর রহমান জাহেদ নিজেকে অত্যন্ত ভদ্র দাবি করে বলেন, ‘আসলে আব্দুল জব্বার নামে ওই প্রধান শিক্ষক আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি তাকে পার্টি অফিসে আসতে বলেছি, এমনটা নয়। বরং আমি তাকে কল করলে জব্বারই বলেন—আমি পার্টি অফিসে আসছি, আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য।’ 

অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, ‘কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা চলছিল। এ সময় আমি ধমক দিয়েছিলাম। কুদরত তাকে মুখ চেপে ধরেনি।’