মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার চর বাউশিয়ায় জিলাপি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে পাঁচ বছরের শিশু। বাউশিয়ার ফরাজীকান্দি গ্রামে মিলাদের জিলাপি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে হয় এ শিশু।
এদিকে, জিলাপির ভেতর ট্যাবলেট জাতীয় কিছু পাওয়া যাওয়ায় এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তির নাম সলিমুল্লাহ (৩৫)। তিনি গজারিয়া উপজেলার চর বাউশিয়া ফরাজীকান্দি গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী শিশুর নাম সাহারা আক্তার (৫)। সে গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের যষ্টিতলা গ্রামের কাতার প্রবাসী কামাল হোসেনের মেয়ে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ভুক্তভোগী শিশুর মা মণি বেগম বলেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার বাবা মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে প্রতিবেশী সুলতান মিয়ার পরিবারের বিরোধ ছিল। তারা বিভিন্নভাবে আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছিল।
‘সম্প্রতি আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চরবাউশিয়া ফরাজীকান্দি গ্রামে বেড়াতে আসি। রোববার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সুলতানের ছেলে সলিমুল্লাহ তার বাড়িতে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। আমার মেয়ে সাহারাকে ডেকে নিয়ে জিলাপি খেতে দেয় সলিমুল্লাহ।’
‘এই জিলাপি খেয়ে আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা মেয়েকে দেওয়া জিলাপিগুলো ভেঙে দেখি তার ভেতর লাল রঙের ট্যাবলেট দেওয়া। প্রত্যেকটা জিলাপির ভেতরে এই ট্যাবলেট ছিল। আমার মেয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।’
শিশুর চাচা কবির হোসেন বলেন, ‘মিলাদের জিলাপি খাওয়ার পর শিশুটি মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে তার পাকস্থলি ওয়াশ করার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক।’
‘শিশুটি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’
বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত সলিমুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এই ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না।’
পরবর্তীকালে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সলিমুল্লাহ বক্তব্য দিচ্ছেন, তিনি বাচ্চার জন্য জিলাপিতে ট্যাবলেট ব্যবহার করেননি। বাচ্চার নানির জন্য ব্যবহার করেছেন। বাচ্চার নানি তার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ধার নিয়ে আর দেন না। তিনি বার বার টাকা চাইলে তাকে নানা বাহানা দিয়ে ফিরিয়ে দেন। সে জন্য তিনি জিলাপির ভেতর বিষজাতীয় ট্যাবলেট ব্যবহার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাচ্চাটি সুস্থ হলে তিনি ফকির বাবার দরবারে ৫০০ টাকা দেবেন বলে মানত করেছেন।’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের ডা. খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, ‘সোমবার সকালে শিশুটিকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত কারণে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’
গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর চাচা কবির হোসেন বাদী হয়ে গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনায় অভিযুক্ত সলিমুল্লাহকে আটক করা হয়েছে।’